সিপ্লাস ডেস্ক: দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে একটু একটু করে বাড়ছে মোটা চালের দাম। এতে মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা। মাঝারি ও সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুমের শেষ দিকে সরবরাহ কমায় বাজারে মোটা চালের দাম বাড়ছে। যদিও সরকারের গুদামে চালের মজুত পর্যাপ্ত। যে কারণে পাইকারি বাজারের একপক্ষের অভিযোগ, মিলারদের কারসাজির কারণেই মূলত চালের দামে উল্লম্ফন। তারা সরবরাহের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে।
অন্যদিকে, চাল ছাড়া অন্য সব নিত্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বগতি। সবমিলিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের। আর ‘দিন এনে দিন খাওয়া’ পরিবারের সদস্যরা হতাশায় পড়েছেন। চালের জন্য বাড়তি টাকা জোগারে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬, যা এক মাস আগে ৫০ থেকে ৫২ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের মধ্যে প্রতি কেজি বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আগে এ চালের দর ছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। আর প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭২ টাকা। এক মাস আগে ছিল ৬৬ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হতো।
অন্যদিকে, সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, খুচরা বাজারে মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম ২.০৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি মাঝারি আকারের চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২.৮৬ শতাংশ আর কেজিপ্রতি সরু চালের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে ২.২৭ শতাংশ।
দেশের বিভিন্ন জেলার আড়ৎ ও গ্রাম অঞ্চলের মিলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বস্তা মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকা, যা এক মাস আগে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি বস্তা মাঝারি আকারের বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকা, যা এক মাস আগে ২ হাজার ২০০ টাকা ছিল। আর প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা, যা আগে ২ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পাইকারি চালের ব্যবসায়ী হালিম চৌধুরী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই মিল পর্যায়ে সব ধরনের চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। যে কারণে বেশি দাম দিয়ে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মিলে মোটা চাল নেই বলে দাবি করা হলেও মৌসুম শেষে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যে পরিমাণ চাল অর্ডার করা হচ্ছে, মিল থেকে দিচ্ছে তার কম। আমনের চাল বাজারে আসতে এখনও মাসখানেক দেরি আছে। এভাবে চলতে থাকলে মোটা চালের দাম আরও বাড়বে।
তবে বাংলাদেশ মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন দাবি করেন, ধানের সংকটে হাসকিং মিলগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ। এখন যেসব ধান রয়েছে সেগুলোর মজুতদার ব্যবসায়ীরা। তারা এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।