মাদ্রাসার সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

কক্সবাজার প্রতিনিধি:  বান্দরবান জেলার  চাকঢালা এম এস  দাখিল মাদ্রাসা সভাপতির বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের নামে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার লিখিত  অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।

হাজী ইসলাম নামে স্হানীয় ভুক্তভোগী অভিযোগ টি দায়ের করেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাকঢালা এম এস দাখিল মাদরাসায় খন্ডকালীন  চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মরহুম হাফেজ দিদারুল আলম কে স্থায়ী নিয়োগ দানের জন্য বিভিন্ন অফিস খরচের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার  অভিযোগ উঠেছে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সিরাজুল হক  প্রকাশ  (সিরাজ ডাক্তারের ) ও ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে।

নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্ন কর্মীকে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে দুই দফায় ১,১৫,০০০  টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার চুক্তি  হয় সভাপতি ও মরহুম হাফেজ দিদারুল আলম এবং তার পিতার সাথে।  অভিযুক্ত সিরাজুল হক চাকঢালা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের  চতুর্থ শ্রেণীর ১টি পদ সহ কয়েকটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে নিরাপত্তাকর্মী/ পরিচ্ছন্নকর্মী পদের জন্য একাধিক আবেদনও করেছিলো আগ্রহী  প্রার্থীরা। কিন্তু কৌশলে  ডেকে খন্ডকালীন কর্মচারি হাফেজ  দিদারকে নিয়োগে মনোনীত করা হবে এমন প্রতিশ্রুতি পুঁজি করে ১,১৫,০০০ টাকা বাণিজ্য করেছে সভাপতি সিরাজুল হক ও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার।

অভিযোগ পত্র থেকে আরো জানা যায়, নিয়োগ থেকে নিজের দায় এড়াতে গত ৮-১১-২২  সভাপতি ও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার  ছৈয়দুল আমিন নামে এক মাদ্রাসা  ছাত্র কে দিয়ে দিদার কে হত্যা করায়,পুত্রের শোকে শোকাভিভূত বাবা হাজী ইসলাম  সুস্থ হওয়ার আগে  নিজেদের সংশ্লিষ্টতা আড়াল করতে তিনি (সিরাজুল হক) তদবির করে  আসামির পক্ষে মামলার  চার্জশিট দিয়ে দেন, যার নারাজি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।

সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সুপার কৌশলে বেশি মুল্য পদ বিক্রি করতে দিদার কে হত্যা করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ পত্রে মরহুম হাফেজ দিদারের পিতা হাজী মোহাম্মদ ইসলাম দাবি করেন গত রমজান মাসে সভাপতি কে চাপ দিলে স্থানীয় আবদুল সালামের মাধ্যমে ৫০,০০০ হাজার টাকা প্রদান করে।গত  ৬-৬-২৩ ইংরেজি তারিখে মাদ্রাসার অবিভাবক সমাবেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে বিষয়টি অভিহিত করা হলে তিনি মৌখিক ভাবে টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেন বলে জানা যায়। স্হানীয় জাফর আলমের মাধ্যমে টাকা শোধ করার কথা থাকলেও  গত ২৭-০৭-২০২৩ তারিখে  সভাপতি  জনৈক মকবুল আহমেদ ছেলে  নাসিরের মাধ্যমে  পাঁচ হাজার টাকা প্রেরণ করলে মো: ইসলাম তা গ্রহণ না করে ফেরত পাঠান। এবং পুত্র শোকে শোকাভিভূত বাবা তার শারীরিক মানসিক চিকিৎসার জন্য জরুরি টাকা ফেরত পেতে আইনি সহায়তা কামনা করেন।

স্থানীয় সুত্রে  জানা যায় সিরাজুল হক  ভুক্তভোগি হাজী মোহাম্মদ ইসলাম ছাড়া ও অনেক চাকরি প্রত্যাশির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন যা নিরপেক্ষ তদন্তে বেরিয়ে আসবে। অনেকে ভয়ে এবং চক্ষু লজ্জায় নিজেদের  দেয়া অর্থ ফেরত পেতে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস  পায় না। বদরুজ্জামান নামের স্হানীয় বাসিন্দা প্রশ্ন রেখে বলেন সিরাজ সাহেবের দৃশ্যমান কোন ব্যবসা বা আয়ের উৎস  নাই, তা হলে তার বিলাসি জীবনযাপন এবং বিলাসবহুল গাড়ি বাড়ি কোথা থেকে আসে।

সভাপতি ও মাদ্রাসা সুপার নিজেদের  আখের গোছাতে গিয়ে সদ্য প্রকাশিত দাখিলের ফলাফলে বিপর্যয় এসেছে কিনা তা ও অবিভাবক মহলে প্রশ্ন উঠছে।

এ দিকে অভিযুক্ত ডাক্তার সিরাজুল ইসলামের একটা অডিও ক্লিপ সংবাদ কর্মীর হাতে এসেছে। যেখানে তিনি অনৈতিকভাবে টাকা গ্রহণ করার সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, একটা লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, উভয় পক্ষকে খবর দিয়েছি। অভিযুক্ত ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম যদি টাকা নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

Scroll to Top