নিজস্ব প্রতিবেদক: শরীফুল ইসলাম ও আরিফুর রহমান দু্ই ভাই। দীর্ঘদিন ধরে তারা মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ছিলেন। দুই ভাইয়ের চক্রটি সেখানে অবস্থানরত বাঙালি প্রবাসীদের কাছ থেকে মসজিদ উন্নয়নের নামে অর্থ আদায় করে বেড়াতেন। এজন্য তারা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নামে একটি অনলাইন ব্যবসা খুলে। হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট হ্যাক করে গ্রাহকদের পরিচিত জনের কাছে নিজেদেরকে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন তারা।
এখানেই শেষ নয়, চক্রটি অনলাইন জুয়া, হুন্ডি ব্যবসা ও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ লেনদেনের কাজও করত। তবে শেষরক্ষা হয়নি। চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ধরা পড়েছে চক্রটির অন্যতম সদস্য শরীফুল ইসলাম।
একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (৯ জুলাই) নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভূয়া ট্রেড লাইসেন্স, ৮টি মোবাইল ফোন, সিমকার্ড, সিল, পাসপোর্ট, এনআইডি কপি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্রসহ প্রতারণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ কার্যালয়ে গ্রেফতারকৃত শরীফুল ইসলামকে নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জুনায়েত কাউছার জানান, প্রতারক চক্রটি মানুষের কাছ থেকে মসজিদে এসি লাগানো, এতিমখানার জন্য অনুদানের কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবসার আড়ালে হুন্ডি, অনলাইন জুয়া ও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ লেনদেনে জড়িত ছিল। বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশের নজরে এলে তদন্ত শুরু হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, চক্রটি সাধারণ মানুষের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে, পরে তাদের পরিচিতদের কাছে ‘সরকারি কর্মকর্তা’ পরিচয়ে অর্থ দাবি করত। অনেকেই সরল বিশ্বাসে মসজিদে এসি লাগানো কিংবা এতিমখানায় দান করার উদ্দেশ্যে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ