চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ডেঙ্গু ও কিউলেক্স থেকে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে বাঁচাতে মশা নিয়ন্ত্রণে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রয়োজনে মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন ওষুধ ও কৌশল খুঁজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন। চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ শাখা এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মশার ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। মশার ব্যাপারে যেভাবে হোক আমাদেরকে একটা জায়গায় আসতে হবে। জনগণ যাতে উপকৃত হয়। জনগণকে যাতে মশার কামড় খেয়ে হসপিটালে আসতে না হয় কিংবা মৃত্যুবরণ না করে এবং তারা কোন ডিস্টার্ব ফিল না করে। মশার ঔষুধের যাতে কোনোভাবেই ঘাটতি না পড়ে। বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মশায় নিয়ন্ত্রণে যেসব ওষুধ ব্যবহার করছে তার মান যদি ভাল না হয়ে থাকে তাহলে আপনারা নতুন ওষুধের সন্ধান করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেনা কল্যাণ সংস্থার কাছ থেকে মেডিসিন কিনছি। নৌবাহিনীরও মশা নিয়ন্ত্রণে একটি ওষুধ আছে বা আরও কোন কোম্পানি যদি ভালো ঔষুধের সন্ধান দিতে পারে সেগুলো আমরা সংগ্রহ করব। এ ব্যাপারে আমরা কোন কম্প্রমাইজ করতে চাই না। মশা নিয়ন্ত্রণে কিছু বিকল্পের কথা ভাবছি আমরা। মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে এমন মাছ, কীটপতঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে।’
মেয়র বলেন, যে সমস্ত পরিচ্ছন্নকর্মী মশার স্প্রে করার ক্ষেত্রে গাফিলতি করছে তাদের অবশ্যই পানিশমেন্টের আওতায় আনা হবে। কেউ কাজে ফাঁকিবাজি করলে এটার দায় দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজারদের নিতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন লোক দিয়ে কাজ করাবো। কারণ জনগণ দুর্ভোগে পড়লে এটার দায় দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে আমাদেরই নিতে হবে।
‘কাজেই আপনাদেরকে আমি স্পষ্ট বলতে চাই আপনারা কেউ গাফিলতি করলে, কেউ ফাঁকিবাজি করলে, কেউ কাজ না করলে লুকানোর চেষ্টা করবেন না। এটা আমাদেরকে ইনফর্ম করেন। আমরা দরকার হলে নতুন লোক দিয়ে কাজ করাব। আমি চাই কাজ হোক। কাজ হতে হবে। না হয় জনগণ দুর্ভোগে পড়বে।’
ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যতে নিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আপনারা জনসচেতনতা বৃদ্ধি করবেন। আমিও চেষ্টা করছি। বিভিন্ন জায়গায় নালা, ঝোঁপ-ঝাড় এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গুর ব্যাপারে আমরা লিফলেট বিতরণ করছি এটা আরও বাড়াতে হবে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জিরোতে নিয়ে আসতে হবে। জনসচেতনতা আমরা যদি বৃদ্ধি করতে না পারি, তাহলে আল্টিমেটলি গিয়ে জনগণের আমরা কোন উপকারে আসতে পারবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ডেঙ্গু মশার জন্য আমরা বারবার বলছি বাসার দু-তিনদিনের জন্য বালতিতে এবং টবের মধ্যে পানি জমিয়ে রাখবেন না এবং খোলা জায়গায় টব রেখে সেখানে পানি জমা করবেন না। কারণ ওখানে পানি জমে গেলেই এডিস মশার লার্ভা জন্মাবে।’
চসিকের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি বলেন, ‘মশার নিয়ন্ত্রণে ৯১ জনের একটি বিশেষ টিম গঠন করে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া ৪১টি ওয়ার্ডেই মশা নিয়ন্ত্রণের নিয়মিত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বড় ওয়ার্ডগুলোতে পাঁচ থেকে ছয়জন এবং ছোট ওয়ার্ডগুলোতে চারজন রুটিন ওয়ার্কের জন্য নির্ধারণ করে দেয়া আছে।’
সভায় চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমাম হোসেন রানা, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা ও মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ