চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে কাট্টলী উপকূলীয় এলাকাতে বিস্তীর্ণ জমি জুড়ে একসময় শীতকালীন শাক-সবজি উৎপন্ন হয়। সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে খাল-জলাশয়ের পানি আসতো সরাসরি জমিগুলোতে। কিন্তু পানির সেই উৎস ভরাট হয়ে যাওয়ায় ছোট হয়ে আসা জমিতে দিতে হচ্ছে কল-কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি।
সরজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৫০ হেক্টর এলাকা জুড়ে মৌসুমি শাক সবজি চাষ করে আসছে কৃষকরা। নতুন আউটার রিং রোড হওয়ার পর এসব এলাকায় অনেক কলকারখানা গড়ে উঠেছে। ফলে ভরাট হয়ে গেছে খাল-জলাশয়, পুকুর। অপরিকল্পিত বাঁধ সৃষ্টি ও সুইজ গেটগুলো অকার্যকর থাকায় এসব জমিতে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি ব্যবহার করছেন কৃষকরা। পাশাপাশি দ্রুত উৎপাদনের জন্য জমিতে ব্যবহার করা হচ্ছে কীটনাশকও।
কৃষকরা বলছেন, খালে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে এসব ময়লা পানি জমিতে ব্যবহার করতে হচ্ছে। লবণাক্ত পানি দেওয়া যায় না। টোল রোড ও আউটার রিং রোড হওয়ার পর অনেক কৃষি জমি দখল হয়ে গেছে।
মূলত শাকসবজি বাজারে আসার আগে অনেকগুলো ধাপ পাড় হয়ে আসে। জমি থেকে বাজারে আসতে আসতে এসব খাবার সতেজ থাকে না। তাই এতে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়। এমনকি ফল ও শাকসবজিকে পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচাতে যে কীটনাশক ওষুধ দেওয়া হয়, তার প্রভাবও এসব পণ্যে থেকে যায়, যা সাধারণ পানি দিয়ে দূর করা সম্ভব হয় না। এর ওপর এসব শাক-সবজি ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত তাজা রাখতে নালা-ডোবা-খাল ও নদী-দিঘির ময়লা পানিতে চুবানোও ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ।
সবজি বিক্রেতাদের থেকে জানা যায়, শুকিয়ে যাওয়া শাক, ধনেপাতা সহ নানান সবজি ক্রেতারা কিনতে চায় না। পানিতে ভিজিয়ে নিলে এগুলো তাজা দেখায়। তখন ক্রেতারাও খুশি হয়ে কিনে নেয়।
উৎপাদিত এসব শাক সবজি বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত তাজা রাখতে খুচরা বিক্রেতারা পানিতে ভিজিয়ে নেয়। আর এই কাজে তারা নালা ও দীঘির দূষিত পানি ব্যবহার করছে। তাছাড়া নগরীর আসকার দিঘি, এনায়েত বাজার রানীর দিঘি, আগ্রাবাদ ঢেবার দিঘি, চান্দগাঁওয়ের মুন্সিপুকুরসহ মাজার সংলগ্ন দিঘিতে নিত্য চলে শাক-সবজি ধোয়ার কাজ।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন