সিপ্লাস ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে চোর সন্দেহে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছে। সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। সম্প্রতি মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের এই ঘটনা ফের ভারতে নারীদের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মালদহ জেলার বানগোলার পাকুয়াহাটে সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার হাট বসে। সেই হাটে দুই নারীকে চোর সন্দেহে আটক করে বেধড়ক পিটুনির ঘটনা ঘটেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কেউ জুতা দিয়ে মারছেন, কেউ কিল, চড়, ঘুসি, লাথি মারছেন। কেউ আবার চুলের মুঠি ধরে হ্যাঁচকা টান দিচ্ছেন। টানাটানির ফলে একপর্যায়ে ওই দুই নারীর পরনের শাড়ি-ব্লাউজ খুলে যায়। তারপরেও থামেনি মারধর।
এসময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল সিভিক পুলিশ। কিন্তু তাতে থামেনি মারের দাপট।
এ দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নিন্দার ঝড় উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
বিজেপি কেন্দ্রীয় কমিটির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালভিয়া সেই ভিডিও টুইট করে লিখেছেন, গত ১৯ জুলাই মালদহের পাকুয়াহাটে দুই আদিবাসী নারীকে অকথ্য অত্যাচার করা হয়। নগ্ন করে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
এরপর তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লেখেন, মুখ্যমন্ত্রী একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও তার রাজ্যে নারীদের সুরক্ষা নেই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি আরও একধাপ এগিয়ে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ মণিপুরের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। মালদহের দুজন দলিত নারীকে বিবস্ত্র করে জুতাপেটা করা হলো। এরপর মণিপুর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর মুখে বড় বড় কথা সাজে না।
তবে রাজ্যের শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা অভিযোগ করেন, মালদহ ঘটনাটি নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। তিনি আরও বলেন, মালদহের এ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। বিজেপি দুটো বিষয়কে গুলিয়ে মণিপুরের বীভৎসতাকে আড়াল করতে চাইছে। আমরা পুরো ঘটনাটির খোঁজ নিচ্ছি। পুলিশও তদন্ত করে দেখছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন দুই জা। সেখান থেকেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।
পুলিশের দাবি, ভিডিওটি তাদের নজরে আসার পর প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ওই দুই নারী চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন এবং পরে স্থানীয় নারী দোকানদাররা তাদের মারধর করেন।