চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : এখন বাসাবাড়ির ময়লা নেওয়ার জন্য টাকা দিতে হলেও একসময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নগরবাসীর কাছ থেকে ময়লা কিনে নিয়ে যাবে, এমন আশ্বাস দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর কাজীর দেউড়ির একটি কনভেনশন সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার একবছর পূর্তিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বাসাবাড়ি থেকে ৭০ টাকা নির্ধারিত। কিন্তু কেউ কেউ হয়তো বেশি নিচ্ছে। এ বিষয়ে ফেসবুকে না দিয়ে সরাসরি লিখিত অভিযোগ দেবেন সিটি করপোরেশনে। বেশি নিলে তাদের বরাদ্দ বাতিল করে দেব। এটাতে আপনাদের (নগরবাসী) আর্থিকভাবে হয়তো কিছু সমস্যা হচ্ছে। যে টাকা এখন ডোর টু ডোর বাবদ দিচ্ছেন- ৭০ টাকা, সেটি আপনাদের বিনিয়োগ। একপর্যায়ে এটা বিনামূল্যে হয়ে যাবে। আরও পরে উলটো টাকা আপনারা পাবেন।’
মেয়র বলেন, এ বছর ৫০-৬০টি বড় বড় রাস্তা উপহার দেব। ১০টি নাগরিক সেবা নিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম অ্যাপস উপহার দেব ডিসেম্বরে। নগরে ৩ হাজার টনের বেশি বর্জ্য তৈরি হয়। ২ হাজার ২০০ টন আমরা সংগ্রহ করতে পারি। আমি ডোর টু ডোর প্রকল্প চালু করেছি। ঘর প্রতি ৭০ টাকার বেশি নিলে ফেসবুকে বেশি না দিয়ে সিটি করপোরেশনে জানাবেন, তাদের বাতিল করে দেব। দেশে প্রথম চট্টগ্রামে বায়োগ্যাস উৎপাদন করতে যাচ্ছি। কোরিয়ান একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করব, সেটা হালিশহরে। বছর-দেড় বছর পর ময়লা নেওয়ার জন্য টাকা দেব। শহর ক্লিন রাখতে হলে শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করতে হবে। ডোর টু ডোর প্রকল্পের কারণে এ মাসে ৫০০ টন বেশি বর্জ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রতিদিনের ময়লা পুরোটা অপসারণ করতে পারলে চট্টগ্রাম নগরী জলাবদ্ধতামুক্ত হবে জানিয়ে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নগরীর জলাবদ্ধতা, এটা ৫০-৬০ শতাংশ কমিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছি। এখন পানির মধ্যে আর মানুষ বাস করে না। আগে বহদ্দারহাট-মুরাদপুর নিয়ে নানা রকম কমেডি হত। আগের মেয়র বাসা থেকে বের হতে পারত না।’
‘এবার ভৌগোলিক কারণে ৫ মাস বৃষ্টি হচ্ছে। তবু সমস্যা হচ্ছে না। শহর পরিষ্কার রাখতে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্রসেসের জন্য আলাদা কনটেইনার দিতে চেষ্টা করব। শতভাগ ময়লা কালেকশনে যদি সফল হতে পারি, জলাবদ্ধতা থাকবে না। সবাই যদি সচেতন না হই, যতই পরিষ্কার করি কমবে না। ময়লার জন্য ডেঙ্গু চিকনগুনিয়া হচ্ছে।’
নগরীতে বর্জ্য থেকে ‘গ্রিন এনার্জি’ উৎপাদনের একটি প্রকল্প করার জন্য তিনটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান মেয়র।
বাণিজ্যিক খাতে কর আদায়ে কঠোর এবং গরীব-মধ্যবিত্তদের জন্য সহনশীল অবস্থান ঘোষণা করে মেয়র বলেন, ‘গরিব ও মধ্যবিত্ত যারাই আমার কাছে এসেছে, হোল্ডিং ট্যাক্স যাতে কমফোর্ট ফিল করে সেটাই করেছি। কমার্শিয়ালে শক্তভাবে আদায় করছি। পোর্টের বিষয়ে কোনো ছাড় দিচ্ছি না। মাত্র ৪৫ লাখ টাকা পাচ্ছি। ৪৭৬ কোটি টাকা আসে, সেটাই চাচ্ছি। তাহলে সিটি করপোরেশনের স্কুলগুলোর ব্যয় নির্বাহ করতে পারব। যেটা আমাদের হক, বন্দরের কাছে সেটাই চাই।’
চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ, নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, সিডিএ চেয়ারম্যান নুরুল করিম, ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ারা বেগম, জেলা পরিষদের প্রশাসক নুরুল্লাহ নুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ






