চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো শহরের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে উল্লেখ করে নগরবাসীকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) নগরের নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাত ও সড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নালা ও নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং হকারদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া পরিদর্শন শেষে মেয়র আহ্বান জানান।
চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, সম্প্রতি একটি শিশু খালে পড়ে মৃত্যুবরণ করেছে, যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। আপনারা যদি তাদের (রিকশাওয়ালা) নিরুৎসাহিত করেন, তাহলেই তারা রাস্তায় নামা বন্ধ করবে। তবে আইনের প্রয়োগও অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে, রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। আমি সিএমপিকে ধন্যবাদ জানাই তারা একদিনেই এক হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করেছে। এই শহরে আর কোনো মা যেন সন্তান হারিয়ে বুক খালি না করে—আমরা সবাই মিলেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে। আমি নিজেকে শুধু একজন মেয়র নয়, একজন নগরসেবক, একজন সমাজসেবক হিসেবে ভাবি। আমরা সবাই মিলে এই শহরটাকে ক্লিন, গ্রিন এবং হেলদি সিটিতে রূপান্তরিত করবো।
মেয়র বলেন, হকাররা সকাল বেলা ফুটপাতে বসতে পরবে না। বিকেল ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তারা বসতে পারবে। ধাপে ধাপে এটা আরও গোছানো হবে। ভবিষ্যতে আমরা এটাকে ‘ইভনিং মার্কেট’ হিসেবে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। হকার পুনর্বাসনের জন্য দুটি নির্দিষ্ট জায়গা আমরা বিবেচনায় রেখেছি। প্রথমটি হলো জহুর হকার্স মার্কেটের জায়গায় একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকা। যেখানে বর্তমানে কিছু অপরাধী চক্র, মাদক ব্যবসায়ী ও আসক্তদের বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। সেখানে হকারদের বসানো যেতে পারে, যেখানে অবশ্যই রেলওয়ে রাজস্ব পাবে।
মেয়র বলেন, কোনো জোর জবরদস্তি নয়, হকারদের বোঝানোর মাধ্যমেই উচ্ছেদ কার্যক্রম সফল করা সম্ভব। কাউকে মারধর করে, বারবার চাপ দিয়ে কোনো কাজ স্থায়ী হয় না। সব পক্ষকে আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে নগরের যানজট নিরাসনে হকার ব্যবস্থাপনা জরুরি।
তিনি বলেন, নগরবাসীর চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করতে ফুটপাত দখলমুক্ত করতেই হবে। পাশাপাশি হকারদের জীবন-জীবিকার বিষয়টি মাথায় রেখেই ধাপে ধাপে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই মিলে শহরটাকে একটি দৃষ্টিনন্দন ও বাসযোগ্য শহরে পরিণত করতে চাই। ষাটের দশকে হয়তো শহরে মানুষের সংখ্যা কম ছিল, তাই পরিবেশও তুলনামূলকভাবে সুন্দর ছিল। আজকের দিনে ৭০ লাখের বেশি মানুষের শহরে। আমরা হয়তো পুরোপুরি সেই পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারবো না, তবে কিছুটা হলেও সেই সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ইতোমধ্যে অনেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের চসিকের নিজের মার্কেট, যেটি নালার ওপর ছিল, আমি তা নিজেই ভেঙে দিয়েছি। মাসে প্রায় ১২-১৪ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তবুও জনগণের স্বার্থে আমরা সেটা করেছি। অতএব, যারা নালার ওপর অবৈধ স্থাপনা করেছেন, তাদের অনুরোধ করবো—আপনারা এগুলো ভেঙে দিন। আমরা চাই শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা কার্যকর হোক, মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাক।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ