বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপি

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম থেকে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগ ওঠার পর সংবাদ সম্মেলন করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি।

শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে নগরের দোস্ত বিল্ডিং নিজস্ব কার্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শুনান এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এনামুল হক এনাম সহ জেলার নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সম্পুরক প্রশ্নের উত্তর দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০২৪ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় বিশেষ করে ডিবিসি নিউজ টিভি আমাদেরকে এবং এস আলম গ্রুপকে নিয়ে একটি বিভ্রান্তিকর মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্যে প্রণোদিত সংবাদ প্রচার করেছে। যা দেখে আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমরা মনে করি, এ ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের ফলে জনমনে বিভ্রান্তি ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। একটি বিষয়কে সঠিকভাবে যাচাই না করে বিভিন্ন মিডিয়া ও ডিবিসি নিউজ টিভি কি কারণে উদ্দেশ্যমূলক এই মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, আমাদের সাংগঠনিক কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত এবং সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন প্রচার করেছে।

প্রচারিত সংবাদে বলা হযেছে, গত বৃহস্পতিবার ২৯ আগষ্ট রাতে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন মইজ্জার টেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের ওয়্যার হাউজে গিয়ে এনামুল হক এনামের তত্বাবধানে এস আলম গ্রুপের বেশকিছু গাড়ী বাহির করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছেন, যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং সাজানো সংবাদ। আসল ঘটনা হলো, গত ২৯ আগষ্ট চট্টগ্রামের কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় অবস্থিত মীর গ্রপের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোনে কে বা কারা প্রথমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তীতে বিএনপি’র নাম দিয়ে টাকা চাঁদা দাবি করছে বলে এনামুল হক এনামকে অবহিত করেন। যদি চাঁদা না দেয়, তাহলে মীর গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গুলোতে হামলা চালাবে বলেও হুমকি দেয়। তাই মীর গ্রুপের পক্ষ সহযোগিতা কামনা করেন। বিএনপি’র নাম দিয়ে ফোন করার ঘটনা অবহিত হওয়ার পর এনামুল হক দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে আমি আবু সুফিয়ানকে ঘটনার কথা জানান। তারপর আমরা কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাট শিল্প এলাকায় অবস্থিত মীর গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে যাই এবং চাঁদাবাজদের হুমকির ব্যাপারে সত্যতা নিশ্চিত করি।

উল্লেখ্য যে বিএনপি নামধারী চাঁদাবাজরা সেইদিন দুপুর ১টা থেকে ৩টা এবং পরবর্তীতে বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে চাঁদা দিতে হবে বলে ০১৯৭৪৩৪৫৩২৪ নাম্বার মোবাইল ফোন থেকে বারবার হুমকি দিতে থাকে। বিএনপি’র দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে বিএনপির নাম ব্যবহার করা চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করতেই আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে ৩০ মিনিট মত অবস্থান করে মীর গ্রুপের কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করি এবং বিএনপি নাম দিয়ে কেউ যদি কোন ধরনের চাঁদা দাবি করে, তাহলে তাদেরকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে আমরা চলে আসি। মূল ঘটনা হলো এটা। অথচ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ডিবিসি নিউজ টিভি প্রচার করেছেন আমরা নাকি কর্ণফুলী শাহ আমানত সেঁতু সংলগ্ন মইজ্জার টেক এলাকায় অবস্থিত এস আলম গ্রুপের ওয়্যার হাউজে গিয়েছিলাম। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছাড়া আর কিছু নয়।

আমরা মনে করি, কয়েকটি গণমাধ্যম ও ডিবিসি নিউজ টিভি কতৃপক্ষ হয়তো কারো কূপ্ররোচনায় ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে উক্ত মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে আমাদেরকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উদ্দেশ্যমূলক ভাবে এই মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচার করেছেন। যাহা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক ও ষড়যন্ত্রমূলক বটে। উক্ত মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা আশা করবো, ভবিষ্যতে সংবাদ প্রচারে সকল গণমাধ্যম ও ডিবিসি নিউজ টিভি সঠিক তথ্য নির্ভর সংবাদ প্রচারে সচেতন থাকবেন। সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনার জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ খুবই প্রয়োজন। এখন সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। যে কোনো অপপ্রচার ও অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল ইসলাম হোসাইনী, এস এম মামুন মিয়া, লায়ন নাজমুল মোস্তফা আমিন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাড. ফৌজুল আমিন, মফজল আহমদ চৌধুরী, নূরুল ইসলাম সওদাগর, ভিপি মোজাম্মেল (আনোয়ারা), মেজবা উদ্দিন চৌধুরী, হাজী মোহাম্মদ রফিক, হাজী মো: ইসহাক চৌধুরী, মঈনুল আলম ছোটন, শফিকুল ইসলাম শফিক, বিএনপি নেতা মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, রেজাউল করিম নেছার, মাষ্টার মোহাম্মদ লোকমান, রেজাউল করিম রেজা, গাজী আবু তাহের, মোর্শেদুল শফি হিরু, সাইফুদ্দিন আহমেদ তৌহিদুল আলম, আবদুল মাবুদ, শামশুল আলম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফিরোজ প্রমূখ।

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে

Scroll to Top