বিপর্যয় আনতে পারে ‘ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়’, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মানুষ

সিপ্লাস ডেস্ক: কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত শক্তিবৃদ্ধির পর মঙ্গলবার (১৩ জুন) কিছুটা শক্তি হারিয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। অত্যাধিক প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ফের অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এটি। এরপরও উপকূলে আঘাত হানার পর ঝড়টি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেলে ভারত-পাকিস্তান উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঝড়টি বর্তমানে দেবভূমি দ্বারকা থেকে ২৯০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, পোরবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, জাখাউ বন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং নালিয়া থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগের তথ্যমতে, আরব সাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় বর্তমানে করাচির থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। ঝড়টিতে বাতাসের বেগ প্রতি ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। তবে দমকা হাওয়ার বেগ কখনো কখনো ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠছে। ঝড়ের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। এর প্রভাবে ৩৫ থেকে ৪০ ফুট উচ্চতার ঢেউ তৈরি হচ্ছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় দ্রুত এগিয়ে আসায় উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলগুলো থেকে মানুষজন সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। গুজরাট কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে কুচ জেলার আট হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

একই কারণে পাকিস্তান সরকারও সিন্ধ প্রদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে আনুমানিক ৮০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ঝড় মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সব মহলকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মানুষের সাগরপাড়ে যাওয়া আটকাতে করাচিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সৈকত ও এর আশপাশের সড়কগুলো।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার ঝড়টি যখন উপকূলে আঘাত হানবে, তখন এর গতিবেগ থাকতে পারে ১৫০ কিলোমিটারের আশপাশে। ফলে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

ঝড়ের কারণে গুজরাটের কুচ ও সৌরাষ্ট্র জেলায় জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আইএমডি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের কারণে আগামী বুধবার (১৪ জুন) পর্যন্ত গুজরাট উপকূলে সমুদ্রের অবস্থা ‘উত্তাল থেকে অতিউত্তাল’ এবং বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ‘অতিউত্তাল থেকে উচ্চ উত্তাল’ থাকতে পারে।

ঝড় অতিক্রম না করা পর্যন্ত গুজরাট, কেরালা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র ও লাক্ষাদ্বীপ উপকূলে জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ভারতের সরকারি সংস্থাটি।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। মূলত বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে এ অঞ্চলের ১৩টি দেশ। প্যানেল অন ট্রপিকাল সাইক্লোনের কাছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের নামের প্রস্তাবিত তালিকা জমা পড়ে। সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হয় পরবর্তী ঝড়ের নাম।

Scroll to Top