বিজয় দিবসে হাটহাজারী, সীতাকুণ্ডে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৬০

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক:  মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি ঘিরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এ সংঘর্ষে এতে অন্তত ৫০-৬০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে হাটহাজারী পৌরসভার কনক কমিউনিটি সেন্টার ও সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এর মধ্যে হাটহাজারীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য শাকিলা ফারজানার অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। দুপুর দেড়টার দিকে কনক কমিউনিটি সেন্টারে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১২ জন আহত হন।

তারা হলেন- হাটহাজারী পৌর যুবদল নেতা আকরাম উদ্দিন, মো. রাশেল, মো. ওয়াসিম, মো. জসিম, মো. বাবলু, মো. শাকিল, মহরম আলী, মো. দুলাল, মো. সাইফুল ও স্থানীয় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন। তারা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে কনক কমিউনিটি সেন্টারে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা করছিলেন শাকিলা ফারজানার অনুসারীরা। খবর পেয়ে মীর হেলালের অনুসারীরা সেখানে হামলা চালান। কমিউনিটি সেন্টারের পেছনে গিয়েও কয়েকজনকে মারধর করা হয়। ওই সময় শাকিলার অনুসারী কয়েকজন পাল্টা হামলার চেষ্টা করেন। তখন কমিউনিটি সেন্টারটিতে ভাঙচুরের ঘটনায় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য শাকিলা ফারজানা বলেন, ‘হাটহাজারী উপজেলা সদরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী নেতাকর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারে আলোচনা সভা করেন। সেখানে মীর হেলালের অনুসারীরা এসে অতর্কিত হামলা চালান। এতে ১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা শুরু হলে পুলিশকে বলা হলেও পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করেনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, সেখানে কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমি জানি না। আমি নগর ও উত্তর জেলার কর্মসূচি নিয়ে শহরে ব্যস্ত ছিলাম। আমার নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন। আমার কোনও নেতাকর্মী সেখানে হামলা চালাননি।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার হোসেন বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপরদিকে, সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৩০-৪০ জন আহত হন। সোমবার দুপুর ১টার দিকে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফৌজদারহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে ফৌজদারহাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন তার অনুসারীদের নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শোভাযাত্রা করে ফৌজদারহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তারা ওই এলাকায় অবস্থান নেন। দুপুর ১টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হাসান তার অনুসারীদের নিয়ে আরও একটি শোভাযাত্রা বের করে একই শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যান।

এ সময় একপক্ষ আরেকপক্ষের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ান। এতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের ২০ জন আহত হন। এর মধ্যে ১৫ জনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাকিদের বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন হাসপাতাল, বেসরকারি আল আমিন হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান বলেন, ‌দুই পক্ষের কেউ এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ব্যাপারে জানতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হাসানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি 

 

Scroll to Top