বিএনপি বুঝে গেছে বিদেশিদের পেছনে ছুটে লাভ নেই : তথ্যমন্ত্রী

সিপ্লাস ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ক্রমাগত নির্বাচনবিমুখ হওয়া এবং চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের কারণে ব্যক্তির লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত বিএনপি আজ খাদের কিনারে। আগামী নির্বাচন বর্জন করলেই তাদের পতন নিশ্চিত।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত সভায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে মন্ত্রী এ অভিমত প্রকাশ করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এমন একটা দল, যে দল করলে সংসদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন দূরে থাকুক, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচনও করা যায় না।

তাদের নেতাকর্মীদের আমি জিজ্ঞাসা করব, যেই দল করলে কোনো নির্বাচনই করা যায় না, আপনাদের কি ঠেকা পড়েছে সেই দল করে তারেক রহমানের লাঠিয়াল বাহিনী হয়ে থাকার!’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যত দিন নির্বাচন করতে না পারবেন, তত দিন বিএনপির কেউ ইউনিয়ন মেম্বার নির্বাচনও করতে পারবেন না―এটিই এখন তাদের নীতি। কিন্তু বিএনপি আগামী নির্বাচন বর্জন করলে বুঝতে পারবে, তাদের নেতাকর্মীরা বর্জন করে নাই এবং কম্বল বাছতে গিয়ে দেখবে পুরো কম্বলই উজাড় হয়ে গেছে। সুতরাং বিএনপিকে বলব, গণতন্ত্রের পথে হাঁটলেই তাদের লাভ এবং তাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে বলব, আর কত দিন আপনারা চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবেন? এটা করে বিএনপি আজ খাদের কিনারে। আগামী নির্বাচন বর্জন করলে খাদের মধ্যেই পড়ে যাবে।

বিএনপির গণমিছিল সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির গণমিছিল থেকে যদি মানুষের ওপর হামলা হয়, পুলিশের ওপর হামলা হয়, মানুষের সহায়-সম্পত্তি নষ্ট করা হয়, আমরা ছেড়ে দেব না। আমরা জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কয়েক বছর ধরে বিদেশিদের কাছে গিয়ে অনেক অনুনয়-বিনয় করেছে। শেষে তারা দেখতে পেল, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি বিদেশিরা কোনো সমর্থন জানাল না এবং তারা যা চেয়েছিল তার কিছুই হচ্ছে না।

এখন তারা ভিন্ন সুরে কথা বলা শুরু করেছে। এখন তারা বলছে, ভারত কী বলল তাতে কিছু আসে-যায় না, যুক্তরাষ্ট্র বা ইইউ কী বলল তাতেও কিছু যায়-আসে না।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তারা দেখেছে, ক’দিন আগে সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা বিএনপির কোনো দাবি নিয়ে কিছু বলেননি। একই কারণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সমন্বিত ইলেকশন মনিটরিং গ্রুপের সাথে বৈঠকটিই বিএনপি বাতিল করেছে। আশাহত বিএনপি বুঝেছে, বিদেশিদের পেছনে ছুটে কোনো লাভ নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই দেশ বাংলাদেশের মানুষের, অন্য কারো নয়। যদি যেতে হয়, জনগণের কাছে যেতে হবে। মহিলা নেত্রীদের নিয়ে সাজগোজ করে বিদেশিদের কাছে গিয়ে বিএনপির কোনো লাভ হয়নি, জ্বালাও-পোড়াও করেও কোনো লাভ হয়নি। এই অপরাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার।’

এর আগে বঙ্গবন্ধু, তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ও তাদের পরিবারের সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান অসামান্য।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনে বহুবার বহু সময় কারাগারে কেটেছে। তিনি যখন কারাগারের বাইরে থাকতেন, বঙ্গমাতা তখন সংসার সামলেছেন আর বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে থাকতেন, তখন বঙ্গমাতা দল এবং সংসার দুটোই সামলেছেন।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আসরারুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন। শেষে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, তাদের পরিবার এবং দেশ ও মানুষের মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালিত হয়।

Scroll to Top