নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, কারাগারে কয়েদিদের অতিরিক্ত চাপ। আমি দেখেছি প্রতিটি রুমে কয়েদিদের থাকার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা থাকে না। ৩০-৪০ জনের জায়গায় ১০০ জন রাখা হয়। এটা বড়ই অমানবিক। কয়েদিদের নির্দিষ্ট পরিমাণ থাকার জায়গা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়া, প্রশাসন গায়েবী মামলায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের কারণে কারাগারের চাপ আরও বেড়ে যায় ফলে বন্দীদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার সংকট সৃষ্টি হয় এগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন।
বুধবার (১৯ ফে্ব্রুয়ারী) জেল রোডস্থ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদিদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব বলেন ।
চট্টগ্রাম কারাগার ডেপুটি জেলার ইব্রাহীমের সঞ্চালনায় এবং সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মেয়র আরো বলেন, কারাগারে কয়েদিদের তুলনায় বাথরুমের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এতে করে বন্দীদের নানা ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এটি অত্যন্ত অমানবিক অবস্থা। বন্দীদের ন্যূনতম মৌলিক অধিকার ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি।
কাসিমপুর কারাগারে আমি দেখেছি আপনার ফুটবল খেলার মাঠ আছে, কলা গাছ, কাটাল গাছ আছে এগুলি কয়দিরা খায়। ঢাকাতে আমাকে যখন এরেস্ট করা হলো আমাকে নাজিমুদ্দিন কারাগার থেকে তারপর ওই যে কেরানীগঞ্জ কারাগার এরপরে নিয়ে গেছে কাসিমপুর কারাগারে পরে চট্টগ্রাম জেলে আমাকে আনা হয়েছে। তাই আপনাদের কয়েদিদের জন্য খেলার মাঠ, বাগান ও পর্যাপ্ত মুক্ত জায়গা থাকবে যেমন আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড বা মিরসরাইয়ের মতো এলাকায় নতুন কারাগার গড়ে তোলার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক সহায়তার সম্পর্কে মেয়র বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে সবকিছু। কয়েদিদের জন্য একজন ডাক্তারের পাশাপাশি একজন সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ এখানে আত্মহত্যার অনেক ঘটনা হয়েছে। যখন একজন কয়েদি এখানে ঢুকে সে যখন হয়তোবা দোষী না এতে করে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কাজেই আমার মনে একজন সাইকোলজিস্ট থাকলে কয়েদিদের মানসিক সাপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে।
কারাগারে মানসম্মত ওষুধের অভাব রয়েছে। আমি দেখেছি অনেক সময় এই নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহারের কারণে রোগীরা সুস্থ হচ্ছে না বরং এলার্জির মত চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। সেজন্য মানসম্মত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, প্রতিটি বন্দিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবিক সেবা প্রদান করা, যাতে তারা সমাজে পুনরায় ফিরে এসে একটি সুন্দর জীবন শুরু করতে পারে। আমি মনে করি, কারাগারগুলোতে শারীরিক সুস্থতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া খুব জরুরি, এবং এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশ, যেমন খেলাধুলার জায়গা, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং সুযোগ সুবিধা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মাসুদ হাসান জুয়েল, মেয়রের ব্যাক্তিগত পিএস জিয়াউর রহমান জিয়া, সমাজ সেবক আলাউদ্দিন আলী, আবুল বশর ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
চাটগাঁ নিউজ /ইউডি/এমকেএন