চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের নাগরিক হারুণ আসাদ মির্জার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ঘটে মৌটুসী (ছদ্মনাম) নামের বাংলাদেশি তরুণীর। ম্যাসেঞ্জারে আলাপচারিতা, খুনসুঁটি ঘনিষ্টতা বাড়ে। গভীর হয় দুইজনের সম্পর্ক। তবে বিপত্তি বাদে এই সম্পর্ক যখন মৌটুসীর পরিবারে জানাজানি হয়। অভিভাবকরা মৌটুসীকে জোরপূর্বক ওই তরুণের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করিয়ে দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৌটুসীর সকল ধরণের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। তার কাছ থেকে যোগাযোগের সব ডিভাইস কেড়ে নেয়। মৌটুসীকে হারুণের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে যা যা করার সবকিছু করে তার পরিবার। কোনও ভাবেই আর মৌটুসীর সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না হারুণ। কিন্তু নাছোড়বান্দা মার্কিন যুবক হারুণ। দুটি মনের মিলনে যে সম্পর্ক মনের তারে এসে সুর বেঁধেছে। সে সম্পর্ক ঘূণে ধরা সমাজের হীনমন্যতায় ফিকে হয়ে যাবে-তা কখনো মেনে নিতে পারেননি তিনি।
অবশেষে প্রিয় বান্ধবীকে ফিরে পেতে হারুণ আসাদ মির্জা আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন। প্রিয় মানুষটিকে খুঁজে পেতে দ্বারস্থ হয়েছেন হাইকোর্টের। কোর্টে তিনি রীতিমত রিট করে বসেন। হারুণ মির্জার রিটের প্রেক্ষিতে শুনানী নিয়ে ওই তরুণীর বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে বাংলাদেশি ওই তরুণীকে বেআইনিভাবে আটকে রাখা কেনো আইনবহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, কক্সবাজার সদর থানার ওসিসহ সংশিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আগামী ২৬ জানুয়ারি সকাল ১১টায় মা-বাবসহ ওই তরুণীকে হাইকোর্টে হাজির করতে কক্সবাজার সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাসমিয়া নুহিয়া আহমেদ। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মার্কিন নাগরিক হারুন আসাদ মির্জার সঙ্গে বাংলাদেশের এক অষ্টাদশী তরুণীর পরিচয় হয়; বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি তরুণীর পরিবার মেনে নেয়নি। এক পর্যায়ে পরিবার জোর করে যোগাযোগের সব ধরনের ডিভাইস কেড়ে নেয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে জোরপূর্বক আটকে রাখা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা, স্বাধীনভাবে চলাচল করতে না দেওয়া, বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা এবং বেআইনিভাবে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা অন্যায়। এ কারণে ওই তরুণীর মার্কিন বন্ধু হেবিয়াস কর্পাস আইনে চলতি মাসের শুরুর দিকে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, কক্সবাজার সদর থানার ওসিসহ সংশিষ্টদের বিবাদী করা হয়। আজ ওই রিটের শুনানি নিয়ে তরুণীর বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি