বান্দরবানে বন্ধের পথে হোটেল-মোটেল-রেস্টুরেন্ট

অনিশ্চিত ২০ হাজার কর্মচারীর চাকরি

মোহাম্মদ ইলিয়াছ, (বান্দরবান) : খরচ পোষাতে না পেরে বান্দরবানে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হতে হয়ে যেতে পারে হোটেল-রেস্টুরেন্ট। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছে সেখানকার প্রায় ২০ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীর চাকরি। বান্দরবানে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, সেবার মাধ্যমে সামান্য লাভের আশায় জেলা জুড়ে পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করেছে প্রায় শতাধিক বিনিয়োগকারী। এসব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অধিকাংশই আবার ঋণগ্রস্ত। এদের সাথে যুক্ত প্রায় ২০ হাজার কর্মচারী।

এছাড়াও রয়েছে গণপরিবহন, চাঁদের গাড়ি, বার্মিজ মার্কেট, ইঞ্জিন চালিত বোট, থ্রি হুইলার, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন খাতে খেটে খাওয়া প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। যাদের জীবিকা সরাসরি নির্ভরশীল পর্যটকদের ওপর। ফলে পর্যটক খরায় তাদের আয় রোজগারেও টান পড়েছে।

জানা গেছে, ২০২০ সাল থেকে করোনা ভাইরাস, বান্দরবানে ভয়াবহ বন্যা, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ৫ আগস্ট পরবর্তী নানান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার ভাবে বান্দরবান এর পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। একের পর এক নিষেধাজ্ঞার ফলে বিপাকে পড়েছে সেখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

হোটেল ডিমোরের ম্যানেজার হ্যাপী মারমা জানান, তিন তারকা মানের তাদের হোটেলটিতে দৈনিক অন্তত ৫০ হাজার টাকা খরচ আছে। পর্যটকের উপস্থতি না থাকায় তাদের হোটেলটি চলতি মাসের গত ৫ তারিখ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন মাস্টার চাটগাঁ নিউজ’কে বলেন,  দীর্ঘদিন ধরে পারিপার্শ্বিক কারনে পর্যটকের উপস্থিতি অশানুরুপ না থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। খরচ পোষাতে না পারায় ইতিমধ্যে বেয়াই বাড়ি, কলাপাতাসহ জেলা সদরের প্রায় ২৫ টি রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী ৩১ তারিখের পর চলতি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে আরও রেস্টুরেন্ট বন্ধ  হবার আশঙ্কা করছেন তিনি।

একই সুরে বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে ক্রমান্বয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বান্দরবান জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে হোটেলের চলমান খরচ বহন করতে না পারায় অনেক হোটেলের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। তাই আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে খুব বেশিদিন আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবেনা আমাদের।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, আমরাতো আশাবাদী। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টার সাথে কথা হয়েছে। আগামীকাল (৩০ তারিখ) এ বিষয়ে মিটিং আছে আমাদের। সেখান থেকে ভালো কিছু হবে বলে মনে করছি।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top