নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলু নিয়ে চলছে ব্যাপক প্রোপাগান্ডা। দেশের বিভিন্ন বাজারে নতুন আলু নাকি ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে- এমন তথ্য দিয়ে প্রোফাইলররা একের পর এক পোস্ট করা শুরু করেছেন। অথচ চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলুই বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি। আর পুরানো আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা ৭০ টাকা কেজি দরে। আলু নিয়ে ফেসবুকের এমন অপপ্রচারে একদিকে যেমন ক্রেতা সাধারণ বিভ্রান্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে অসাধু সিন্ডিকেট গুজবকে কাজে লাগিয়ে আলুর দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে এমন শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
সচেতন মহল মনে করছেন, বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে অপপ্রচারকারীরা বিভিন্ন পণ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির গুজব ছড়িয়ে বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছেন। তবে ফেসবুকের প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হয়ে বাজারের প্রকৃত অবস্থা জেনে পণ্য ক্রয়ের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউড়ি বাজার সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, এই বাজারে নতুন আলুর কেজি ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া মুন্সিগঞ্জের কোল্ড স্টোরেজের ললিতা আলু (সাদা) কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, রিয়াজউদ্দিন বাজার ও পাহাড়তলীর আড়তে এই আলু কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকায়।
তবে সরবরাহের উপর নির্ভর করে আলুর দাম নিয়ন্ত্রিত হলেও একলাফে ৪০০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে- ফেসবুকের এমন প্রোপাগান্ডাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন খোদ আলু ব্যবসায়ীরাও।
রেয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১০-১৫ দিন আগে মুন্সীগঞ্জে ক্ষেত পর্যায়ে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। ৫০ কেজির বস্তায় কেজিপ্রতি আলুর দাম পড়েছে ৩৫ টাকা। গত সপ্তাহেও কোল্ড স্টোরেজে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হয়েছে ২২’শ টাকায়। মানে পাইকারিতে কেজি ছিল ৪৪ টাকা। তবে চলতি সপ্তাহে ২৭’শ টাকায় (কেজিপ্রতি ৫৪ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।
রিয়াজুদ্দিন বাজার আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক শিবলী বলেন, বর্তমানে বাজারে মুন্সীগঞ্জের আলু কেজিপ্রতি ৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ভারত থেকে আমদানিকৃত আলু পাইকারি কেজি ৪৮ টাকা চলছে। নতুন আলুর দাম কিছুটা বেশি। তবে সেই আলু খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে। এখনো সেগুলো পাইকারিতে আসেনি। কিন্তু ৪০০ টাকা আলুর কেজি এটা তো অবিশ্বাস্য। ফেসবুকে এরকম নানান গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
কাউসার আহমেদ নামে পটিয়ার এক বাসিন্দা জানান, পটিয়া মুন্সেফবাজারে নতুন আলুর কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাইনের আলু ৭০ টাকা কেজি। ফেসবুকের গুজবটি আমিও দেখেছি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, মুন্সিগঞ্জভিত্তিক সিন্ডিকেট আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করে। তারা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীাদের সাথে ফোনে ফোনে আলুর দাম নির্ধারণ করে। তবে আলুর কেজি ৪০০ টাকায় লাফ মেরেছে এটা ভিত্তিহীন। সাম্প্রতিক সময়ে নানান ধরণের গুজব, প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। তবে ভোক্তাদেরকে সতর্ক ও সচেতন হয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনকেও গুজব প্রতিকারে ভূমিকা রাখতে হবে।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ