চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’কর্মসূচিেত চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকিলয়া নতুন ব্রিজ এলাকায় আন্দোলনকারীরা পুলিশের সাথে দফায় দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত পুলিশি প্রতিরোধে ছত্রভঙ্গ হয়ে এলাকা ছেড়ে গেছে আন্দোলনকারীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুরো এলাকা পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণফুলীর শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রিজ) এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামে চলাচলকারী সকল যানবাহন । পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরাতে গেলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ে পাঠিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন নাজমুল হাসান (২৫)। তিনি সরকারি সিটি কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বলে জানা গেছে। এছাড়া সংঘর্ষে শিক্ষার্থী-পুলিশসহ আহত হয়েছেন। এদিকে পুলিশের টিয়ারসেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে বেশ কয়েকজনের শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থলে থাকা নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করার চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা তাদেরকে সরিয়ে দিয়েছি। পুলিশের ওপর তারা পাল্টা আক্রমণ করেছে। তাদের যে আক্রমণাত্মক ভঙ্গি, এটা কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীদের হতে পারে না। আপনারা (সাংবাদিক), আমরা এবং জনগণ দেখেছে এখানে তারা অসৎ উদ্দেশ্যে ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করার জন্য এবং নাশকতা সৃষ্টির জন্য সমবেত হয়েছিলো। বেশ কয়েকজনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এখনো অভিযান চলমান আছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
উপ-কমিশনার আরও বলেন, যান চলাচল সারাদিন স্বাভাবিক থাকবে। বে-আইনি কোনো কর্মকাণ্ড আমরা বরদাস্ত করবো না। আমরা অবশ্যই যৌক্তিক আন্দোলনে সহমর্মিতা জানাই। তবে সেই সুযোগে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে, হামলা করে, আগুন দিয়ে জনজীবনে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এদিকে কোটা আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীতে বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন জেলার সড়কগুলোতে যান চলাচল সীমিত রয়েছে। বন্ধ আছে দূরপাল্লার যান চলাচল।
আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করছি। আমাদের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। কেউ বা কোনো দল যদি আমাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে তবে সেটা একান্তই তাদের ব্যাপার। এতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের ওপর যখন পৈশাচিক হামলা চালানো হয়েছে, তখন আমরা প্রতিরোধ করেছি। প্রতিরোধ গড়েও ব্যর্থ হয়েছি। ফলে আমাদের ভাইয়েরা শহিদ হয়েছেন এবং হাজারো ভাই-বোন আহত হয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস