বাংলাদেশিদের গোল্ডেন ভিসা দিবে আমিরাত

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ভারতীয় এবং বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে। সাধারণত, গোল্ডেন ভিসা পেতে বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও, এই বিশেষ মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা পেতে খরচ হবে অনেক কম, সেইসঙ্গে এর সুবিধাও থাকছে বিশাল।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে দেশটিতে কোনো ব্যবসা অথবা কমপক্ষে ২ মিলিয়ন দিরহাম (৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি) মূল্যের সম্পত্তি কিনতে হতো। তবে, নতুন মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা নীতির আওতায় ভারতীয় ও বাংলাদেশিরা মাত্র ১ লাখ দিরহাম (প্রায় ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি) ফি দিয়ে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় এই নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে প্রস্তুত। ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এই নতুন ভিসা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। রায়াদ গ্রুপ নামে একটি পরামর্শক সংস্থা ভারত ও বাংলাদেশে মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রাথমিক রূপটি পরীক্ষা করার দায়িত্ব পেয়েছে। নতুন এই ভিসাকে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ বলে অভিহিত করেছেন রায়াদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব।

ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এই পাইলট প্রকল্প সফলভাবে শেষ হওয়ার পর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট) আওতাভুক্ত দেশগুলোতেও এই নতুন ভিসা চালু করা হবে।

নতুন গোল্ডেন ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এবং অনুমোদনের বিষয়ে রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেন, ‘যারা এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে। এর আওতায় অর্থপাচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড যাচাইও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও পরীক্ষা করা হবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার এবং ব্যবসাগুলো আবেদনকারীর কাছ থেকে সংস্কৃতি, অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, স্টার্টআপ, পেশাদার পরিষেবা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কীভাবে উপকৃত হতে পারে, তা যেন নির্ধারণ করা যায়।’

আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাইয়ের পর রায়াদ গ্রুপ তার আবেদনপত্রটি সরকারের কাছে পাঠাবে এবং সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তর মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আবেদনকারীদের দুবাই ভ্রমণ করতে হবে এবং তারা নিজ দেশ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন নিতে পারবেন।

রায়াদ কামাল আইয়ুব জানান, আবেদনগুলো ভারত ও বাংলাদেশের ওয়ান ভাস্কো সেন্টার (ভিসা কনসিয়ারজ সার্ভিস কোম্পানি), তাদের নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল, অথবা তাদের ডেডিকেটেড কল সেন্টারের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।

নতুন ভিসার সুবিধা

ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জন্য চালু হতে যাওয়া নতুন ভিসার অন্যতম বড় সুবিধা হলো, এটি সম্পত্তি-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা থেকে আলাদা। সম্পত্তি-ভিত্তিক ভিসা সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলে বাতিল হয়ে যেতে পারে, কিন্তু মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা একবার পেলে, তা স্থায়ী হবে।

রায়াদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব জানান, যারা এই ভিসার জন্য মনোনীত হবেন, তারা তাদের পরিবারও আমিরাতে নিয়ে আসতে পারবেন এবং তাদের ভিসার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর্মী ও গাড়িচালক রাখতে পারবেন। এ ছাড়া তারা আমিরাতে যেকোনো ব্যবসা বা পেশাদার কাজ করতে পারবেন।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top