মামলা না তোলায় বাদিকে খুন করে লাশ ফেললো পুকুরে!

বাঁশখালী প্রতিনিধি: জায়গা জমি ও বাড়িতে হামলা সংক্রান্ত বিবাদের জের ধরে মামলা করেছিলেন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মোজাহের আহমদ (৪৯)। সে মামলাটিই কাল হলো তার। মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিবাদিদের উপর্যুপরি হাতুড়ির আঘাতে মুত্যু হয়েছে মোজাহেরের।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাপজানি বাপের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, তাকে মাথায় গুরুতর আঘাত করে হত্যা করার পর লাশ পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে খবর পেয়ে বাঁশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসাপাতাল মর্গে নিয়ে আসে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নিহত মোজাহের আহমদ ওই এলাকার দরাফ আলী সিকদার বাড়ির মো. শেয়ার আলীর পূত্র।দীর্ঘদিন জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল পার্শ্ববর্তী আলী আকবর, মো. সায়মন, আব্দুর রহমান ও মো. নাছির গংদের সাথে। তারই সূত্র ধরে কয়েকমাস আগে নিহত মোজাহের আহমদের পুত্র শাকিলকে মারধর করে একই এলাকার আলী আকবরের ছেলে মো. দেলোয়ার।

এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের মে মাসের ৯ তারিখ মোজাহেরের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং মামলা তুলে নিতে হুমকি ধমকি দিতে থাকে।

নিহতের ছোট ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকমাস আগে আমার বড় ভাই নিহত মোজাহের আহমদের পুত্র শাকিলকে মারধর করে একই এলাকার আলী আকবরের ছেলে। শুধু তাই নয়, তারা মামলা তুলে নিতে আমাদের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমার ভাই বাদি হয়ে মো. সায়মন, মো. আকবর, আব্দুর রহমান, মো. দেলোয়ার, মো. নাছিরসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০ জনকে অজ্ঞাত রেখে বাঁশখালী থানায় এজহার দায়ের করেন।

তিনি বলেন, ওই মামলার এজহার নামীয় আসামি মো. সায়মন (৩৫), আব্দুর রহমান (৩৫) ও মো. নাছিরকে (৪০) আটক করে বাঁশখালী থানা পুলিশ তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এর পর থেকে পলাতক অন্য আসামিরা ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। গতকাল (১৪ আগস্ট) উক্ত মামলায় আমি ও আমার বড় ভাই মোজাহের হাজিরা দিই। পরে আমার ভাই মোজাহের তার নিজ বাড়িতে চলে যায়। আমি জলদির বাসায় থেকে যাই।

তিনি আরও বলেন, আমার বড় ভাই বাড়িতে চলে যাওয়ার সময় আমাদের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে আগে থেকে উৎপেতে থাকা প্রতিপক্ষের লোকজন ভাইকে ধরে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে আটকে রেখে হাতুড়ি দিয়ে উপর্যুপরি মাথায় গুরুতর জখম করে হত্যা করে তাদের বাড়ির পুকুরে ফেলে চলে যায়। আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/জসিম/জেএইচ/এসএ

Scroll to Top