ঈদগাঁও প্রতিনিধি: বাঁকখালী নদী কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। যাকে কেন্দ্র করে হাজারও কৃষকের মুখে হাসি ফোটে কিংবা সিক্ত হয় দু’নয়ন। আশির দশকেও যে নদীতে বারো মাস পানির প্রবল স্রোত বইতো তা যেন এখন স্বপ্ন। শুষ্ক মৌসুমে এর অবস্থা মৃতপ্রায়। বোরো মৌসুমে প্রভাব পড়ে নদীর আশপাশের এলাকাগুলোতেও। নদীর দুই পাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়।
কৃষকের চাহিদা মেটাতে এখন বাঁধ দিয়ে পানি জমা রাখতে হয়। সময়মতো বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় হতাশায় ভুগতে হয় কৃষকদের। দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ যথা সময়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতি বছর চরম হতাশায় পড়েন জেলার অন্তত ২০ হাজার কৃষক। তবে এ বছর এলাকার কৃষকের মুখে হাসি ফোটায় সাইফুদ্দিন নামের এক ঠিকাদার। তিনি মাত্র ২৩ দিনে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার একটি বাঁধ নির্মাণ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
ঠিকাদার সাইফুদ্দিন বলেন, ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ প্রকল্পটি টেন্ডারের মাধ্যমে আমি পেয়ে ২২ তারিখ বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করি এবং ১৭ জানুয়ারি শেষ করি। এতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে শ্রমিক সংকট হয়। একারণে ২৩ দিন সময় লেগেছে। অন্যথায় ১০ থেকে ১২ দিনে কাজটি শেষ হয়ে যেতো দাবি করেন তিনি।
ঝিলংজার চান্দের পাড়ার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঁকখালী নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখতে রাবার ড্যামের পরির্বতে ১১০ মিটারের একটি অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। দ্রুত সময়ে এ বাঁধ নির্মাণের পর থেকেই হাসি ফোটেছে রামু সদরের প্রায় ২০ হাজার কৃষকের মুখে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত বাঁধটি নদীর বুকে ধরে রেখেছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। আর যে পানি দিয়ে চলতি শুষ্ক মৌসুমে রামু উপজেলায় গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ, ফঁতেখারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, চাকমারকুল, ও সদর উপজেলার ঝিলংজা, পিএমখালীসহ বাঁকখালীর দুপাশের প্রায় ৫০ টি গ্রামের বিশাল এলাকা জুড়ে জমিতে চাষাবাদ করছেন কৃষকরা।
কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন বলেন, নদীতে পানি না থাকলে এর আশপাশের এলাকার ভূ-গর্ভের পানির স্তরও কমে যায়। বর্তমানে বাঁকখালী নদীর উপর পানি থাকায় নদীর আশপাশের এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর উপরে উঠে এসেছে। আর এই কারণে বাঁকখালী নদীর দুপাশের জমি গুলোতে দ্বিগুণ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি সংকট না থাকায় শুকনো মৌসুমে ধান এবং সবজি উৎপাদন করে দ্বিগুণ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা। জমিতে সময়মতো পানি সেচ করতে পারায় ফসলে ভরে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
চাটগাঁ নিউজ/এমএসআই