চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক ও সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়ার চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বিনা প্রতিরোধে এ চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বন্দর এলাকায় এক মাসের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। দেশবিরোধী এ তৎপরতা প্রতিহত করতে প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মোড়ে শ্রমিক-ছাত্র-পেশাজীবী-নাগরিকবৃন্দ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিনা টেন্ডারে ডিপি ওয়ার্ল্ডকে নিউমুরিং টার্মিনাল তুলে দেওয়ার আয়োজন সম্পন্ন করেছিল। গণঅভ্যুত্থানের পরও বর্তমান সরকার কেন আওয়ামী লীগের এ চক্রান্ত বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে, তার জবাব সরকারকে দিতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার উপর লাভে আছে। তারপরও বিদেশি কোম্পানির হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার আগে তাদের মুনাফা নিশ্চিতের জন্য সরকার বন্দরের ট্যারিফ ৪১% বাড়িয়েছে। অথচ একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ও ন্যায্যতা নেই। কিন্তু বর্তমান সরকার যেরকম তড়িঘড়ি ও কারও মতামতের তোয়াক্কা না করে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে, তাতে প্রবল সন্দেহ ঘনীভূত হয়ে উঠেছে যে, সরকার কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে? অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে একাধিক বন্দর নেই, দেশের সিংহভাগ আমদানি রপ্তানি যে বন্দর দিয়ে হয়, সে বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে কেউ তুলে দেয় না। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানগত কারণে এর সাথে দেশের সার্বভৌমত্ব-নিরাপত্তার কৌশলগত প্রশ্নও যুক্ত। একারণেই আমরা দাবি তুলেছি, চট্টগ্রাম বন্দরের মতো কৌশলগত জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের না, বেসরকারিকরণও না, জাতীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিচালনা করতে হবে।
গণমুক্তি ইউনিয়নের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজা মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদ আলম, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক এডভোকেট শফি উদ্দিন কবির আবিদ, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সেক্রেটারি ইব্রাহিম খোকন, ডক শ্রমিক দলের সেক্রেটারি আখতারউদ্দিন সেলিম, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সেক্রেটারি জাহিদউদ্দিন শাহীন, গণঅধিকার চর্চা কেন্দ্রের মশিউর রহমান খান, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার পরিষদের প্রকৌশলী সিঞ্চন ভৌমিক, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সেক্রেটারি জাহেদুন্নবী কনক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নেতা সাইফুর রুদ্র, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সভাপতি হুমাযুন কবির, আবদুল্লাহ আল মামুন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রামের নগরের দপ্তর সম্পাদক লাবণী আকতার।
সমাবেশ পরিচালনা করেন গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি সত্যজিৎ বিশ্বাস।
সমাবেশ থেকে বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে না দেওয়ার দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার ডাকে আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে সকালে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আহুত অনশন ধর্মঘট কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানানো হয়।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ






