নিজস্ব প্রতিবেদক: যত দিন যাচ্ছে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। এতদিন ডেঙ্গু আক্রান্তদের ক্ষেত্রে শরীরে জ্বর থাকত। তাপমাত্রা কম হলেও থার্মোমিটারে পারদ ১০০- ২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে উঠানামা করত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে রোগীর শরীরে কোন ধরণের জ্বরের চিহ্ন নেই। অথচ পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু পজিটিভ। আবার এর সাথে আক্রান্ত রোগীদের শক সিনড্রোম, হেমাটোক্রেট লেবেল কমে যাওয়া, কার্ডিওজেনিক শকের বিষয়টিও রয়েছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু বিষয়ক ফোকাল পারসন ডা. নূর মোহাম্মদ বলেন, এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের লক্ষণেও পরিবর্তন হয়েছে। শরীরে জ্বর উঠছে না বা হলেও তাপমাত্রা বেশি উঠছে না। কিন্তু পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু পজেটিভ আসছে। আর রোগীর ব্লাড প্রেশার খেয়াল রাখতে হবে। ডেঙ্গু শনাক্ত হবার প্রথম দিন থেকেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। গত বছরের চেয়ে এবার গুরুতর রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। কার্ডিওজেনিক শকের কারণে রোগীদের মাল্টিঅর্গান অ্যাটাক হচ্ছে। রোগীর অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। চলতি বছর জেলার মোট ৩৬৪৪ জন শনাক্ত ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ১৭১৭ জনই চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি নভেম্বরের গত ১৮ দিনে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অক্টোবরে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। জানুয়ারিতে দু’জন এবং মার্চে একজন মারা গেছে। এপ্রিল, মে ও জুনে ডেঙ্গুতে কোন মৃত্যু নেই। জুলাই ও আগস্টে একজন করে এবং সেপ্টেম্বরে ১১ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৪৪ জন। এর মধ্যে চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৯ জন।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এবার আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার দুটোই বেশি। জানতে পেরেছি, ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৮৮ ভাগই ডেন-২ তে আক্রান্ত। এছাড়া কসমোপলিটন সাবগ্রুপে আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি। এর প্রভাবেই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে মনে হচ্ছে।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি