সিপ্লাস ডেস্ক: দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক স্তম্ভ’ উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার সকাল ১০টায় এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের প্রকাশনা ‘আমাদের বিচারালয়’ এর মোড়কও উন্মোচন করেন। পরে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের যাত্রার উপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মমতাজউদ্দিন ফকির।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধনের দিন বঙ্গবন্ধু যে স্থানে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন, ঠিক ঐ স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক স্তম্ভ’। এতে স্থান পেয়েছে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ৬৯ আইনজীবীর নাম।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে বঙ্গবন্ধু স্মারক স্তম্ভ নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। অন্যান্য উপাদানের পাশাপাশি উন্নতমানের টাইলস ব্যবহার করে স্তম্ভটি নির্মাণ করে গণপূর্ত বিভাগ। স্মারক স্তম্ভের কাজ দ্রুত শেষ করতে গত এক মাস শ্রমিক-কর্মচারীরা টানা কাজ করেন বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের ঢাকা জোন-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুজ্জামান চুন্নু।
স্মারক স্তম্ভে ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর সংবিধানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরের ছবি এবং ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে ভাষণের ছবি ম্যুরাল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া স্তম্ভে সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং সংবিধানের ৯৪ এবং ৯৫ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করা হয়েছে।
স্মারক স্তম্ভে যেসব শহীদ আইনজীবীর নাম স্থান পেয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন– যশোরের এম মশিউর রহমান, কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, পাবনার মুহাম্মদ আমিন উদ্দিন, ঢাকার আবদুল আহাদ, এ কে এম সিদ্দিক (হেনা মিঞা), খন্দকার আবু তালেব, দীনেশ চন্দ্র রায় মৌলিক, মো. মফিজুর রহমান, সৈয়দ আকবর হোসেন (বকুল মিয়া), দেওয়ান মাহবুব আলী, বাবু লাল মোহন শিকদার ও মোহাম্মদ ইছহাক; চট্টগ্রামের রায় সাহেব কামিনী কুমার ঘোষ, আবুল হোসেন, নজমুল হক সরকার, বীরেন্দ্রনাথ সরকার, মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন ও গোলাম মোস্তফা খান; খুলনার আবদুল জব্বার, এস এম আইয়ুব হোসেন ও আবদুর রহিম; সিলেটের মো. আব্দুল হাফিজ ও রামরঞ্জন ভট্টাচার্য্য; বরিশালের জিতেন্দ্রলাল দত্ত ও সুধীর কুমার চক্রবর্তী; রংপুরের এ ওয়াই মাহফুজ আলী (জররেজ মিয়া), পূর্ণচন্দ্র সরকার, শিবেন্দ্রনাথ মুখার্জি ও বিজয় চন্দ্র মিত্র; ফরিদপুরের জিতেন্দ্রনাথ সেন, রাজবাড়ীর কালীশঙ্কর মৈত্র, কক্সবাজারের জ্ঞানেন্দ্রলাল চৌধুরী ও বৌধেন্দ্র বিকাশ ভট্টাচার্য, কুষ্টিয়ার আবদুল গণি, দিনাজপুরের সুমঙ্গল কুমার কুণ্ডু ও মো. হাবিবুর রহমান এবং নেত্রকোনার অখিল চন্দ্র দাস, ফজলুল হক ও লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস।