সিপ্লাস ডেস্ক: চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন পরদিন সকাল থেকেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঢাকায় সেতু ভবনে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, (২৮ অক্টোবর) টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে পতেঙ্গা প্রান্তে। এরপর আনোয়ারা প্রান্তে কোরিয়ান ইপিজেডের মাঠে একটি জনসভা হবে।
“টানেলের উদ্বোধনের পর দিন সকাল ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।”
টানেলের সার্বিক দিক তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পের এলাইনমেন্ট পতেঙ্গা প্রান্ত, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হতে কর্ণফুলী নদীর ২ কিলোমিটার ভাটিতে। আর টানেলের আনোয়ারা প্রান্ত আনোয়ারা উপজেলার কাফকো সার কারখানার নিকটে। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
“দুই টিউব বিশিষ্ট চার লেনের টানেল প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৪ হাজার ৬১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তা ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার হলেও মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩১৫ কিলোমিটার। ব্রিজ-ভায়াডাক্টের দৈর্ঘ্য ৭২৭ মিটার (আনোয়ারা প্রান্তে), অ্যাপ্রোচ সড়কের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার, টোল প্লাজার দৈর্ঘ্য ৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার, আন্ডার পাস ৬টি (আনোয়ারা প্রান্তে পাঁচটি এবং পতেঙ্গা প্রান্তে একটি), কালভার্ট ১২টি, সার্ভিস এরিয়ার ৩০টি বাংলো, একটি ভিআইপি বাংলোসহ মোটেল মেস, হেলনা সেন্টার, কনভেনশন সেন্টার, জাদুঘর, সুইমিংপুল, ব্রিজ, মসজিদ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা রয়েছে।
টানেল নির্মাণে বাণিজ্যিক চুক্তি হয় ২০১৫ সালের ৩০ জুন। পরের বছরের ১৪ অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তি পরস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি।
টানেলের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, কর্ণফুলী নদীর উভয় পাশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং চীনের সাংহাই শহরের ন্যায় চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি অ্যান্ড টু টাউন’ মডেলে গড়ে তোলাই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।