নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে ওয়ান সিটি টু টাউনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃহত্তর চট্টগ্রামকে সাজাতে চান বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে ‘আমরা করবো জয়’র উদ্যোগে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরের ফিরিঙ্গিবাজারের কর্ণফুলী নদী সংলগ্ন মাঠে দুই দিনব্যাপী টানেল উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে শতাধিক সাইকেলের বহর নিয়ে র্যালিটি যখন সমাবেশস্থলের দিকে আসছিল ঠিক সে মুহূর্তে বিকেলের শান্ত নীল আকাশে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী হাতে নাটাই নিয়ে উড়াচ্ছিলো রংবেরঙের ঘুড়ি। ঘুড়ি উৎসবের ফাঁকে ফাঁকে চলছিল আঞ্চলিক গানের আসর।
চাঁটগাইয়া পিঠা এবং মহেশখালীর খিলি পান হাতে অতিথিদের বরণে দাঁড়িয়েছিলেন এক দল তরুণ তরুণী। এরই মাঝে এসে উপস্থিত হন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অনুষ্ঠানের সভাপতি চট্টগ্রাম নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এবং মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম ইমরান আহাম্মেদ ইমুর সঞ্চালনায় শুরু হয় শুভেচ্ছা বক্তব্য।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, এ টানেল নিয়ে আমার বাবা মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। আমার বাবার প্রথম নির্বাচনের ইশতেহারেও টানেল নির্মাণের কথা উল্লেখ ছিল কারণ আমাদের দেশের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৭০ ভাগ আসে এ কর্ণফুলী নদী থেকে। এ কর্ণফুলী নদী হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। তাই আমাদের চাওয়া ছিল কর্ণফুলী নদীতে যাতে পলি না জমে সেজন্য নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু অথবা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ। দুঃখজনকভাবে তৎকালীন বিএনপি সরকার কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি আধা ঝুলন্ত সেতু করে কর্ণফুলী নদীকে একটি মৃতপ্রায় নদীতে পরিণত করেছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ওয়ান সিটি টু টাউনের মাধ্যমে বৃহত্তর চট্টগ্রামকে সাজাতে চান। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল এ টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম ইতিহাসে জায়গা করে নেবে নিঃসন্দেহে। চট্টগ্রামের অর্থনীতির দ্বার আরো উন্মোচিত হবে এ টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে।
আগামী নির্বাচনেও চট্টগ্রামের সব ভোটারকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মার্কা নৌকা মার্কায় ভোট দানের উদাত্ত আহবান জানান শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল।
খোরশেদ আলম সুজন ব্যতিক্রমধর্মী ‘শেখ হাসিনার শাসনকালে, নদীর তলে গাড়ি চলে’, ‘শেখ হাসিনার শাসনকালে, পদ্মার ওপর গাড়ি চলে’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আগত দর্শকদের উজ্জীবিত করেন।
সন্ধ্যার আকাশে ভেসে ওঠে লাল সবুজের আতশবাজি। আতশবাজির আলোতে আলোকিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত দর্শকরা তখন মন ভরে উপভোগ করতে থাকেন শিল্পীদের কণ্ঠে গাওয়া চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী শেফালী ঘোষের ‘ছোড ছোড ঢেউ তুলি ফানি। লুসাই পাহাড়ত্তুন লামিয়ারে যার গৈ কর্ণফুলী’ গানটি। পুরো অনুষ্ঠানস্থল তখন এক আবেগ অনুভূতিতে পরিণত হয়। এর পর একের পর এক চাঁটগাইয়া গানে মেতে উঠেন উপস্থিত দর্শকরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী। বক্তব্য দেন নগর ১৪ দল নেতা মাওলানা নজরুল ইসলাম আশরাফী ও মিটুল দাশগুপ্ত। বক্তব্য দেন জহির উদ্দিন মো. বাবর, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, কাউন্সিলর আতাউল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপিকা তাহমিনা বেগম, আমিনুর রশীদ দুলাল, রুহুল আমিন তপন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন, ফরহান আহমেদ, মো. সালাউদ্দিন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, পুলক খাস্তগীর, আব্দুস সালাম মাসুম।