নিজস্ব প্রতিবেদক: অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত লাইটার জাহাজ চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে আগামীকাল থেকে সমন্বিত সিরিয়ালে জাহাজ চলাচলের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হতে যাচ্ছে। জাহাজ বুকিংয়ের সময় ৬০ শতাংশ ফি অগ্রীম পরিশোধের নিয়ম রেখে সমন্বিত সিরিয়াল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে যেসব শিল্পমালিকের লাইটার জাহাজ রয়েছে তারা নিজেদের আমদানি করা পণ্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় খালাস ও পরিবহন করবেন।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় এ লক্ষ্যে নৌবাণিজ্য দপ্তরে প্রথম বার্থিং সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ-বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, বিবদমান সব পক্ষের প্রতিনিধির সমম্বয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি গঠনের আগে সব পক্ষকে নিয়ে সভা করেছি আমরা। সোমবার প্রথম সিরিয়াল নির্ধারণী বার্থিং সভা হবে। সেই সিরিয়াল অনুযায়ী বহির্নোঙরে পণ্য খালাস ও পরিবহন হবে।
তিনি বলেন, লাইটার জাহাজ বুকিং করতে অগ্রীম ৬০ শতাংশ ফি পরিশোধ করতে হবে। বাকি ৪০ শতাংশ ফি পরবর্তীতে দিতে হবে। সিরিয়াল দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের প্রতিনিধি এবং নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া উক্ত অর্থ পরিশোধ না হলে অভিযুক্ত কার্গোর এজেন্টকে পরবর্তীতে জাহাজ প্রদান করা হবে না।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিভোয়া), কোস্টাল শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) এবং ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অব চিটাগাং (আইভোয়াক) নামের তিনটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) মাধ্যমে এতদিন সিরিয়াল দেওয়া হতো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি বাড়লে কিংবা স্বাভাবিক হলে লাইটার জাহাজগুলোকে আর অলস বসে থাকতে হবে না।
এদিকে, আইভোয়াকের বাকি দুইটি সংগঠনের বিরোধ দেখা দিলে পৃথক সিরিয়াল দেওয়া হয়। নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও নৌ বাণিজ্য দপ্তরের নানা উদ্যোগের পর আবার লাইটার জাহাজের সমন্বিত সিরিয়াল দেওয়ার বিষয়টি আলোর মুখ দেখছে। জাহাজের সিরিয়াল নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে সেজন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ও অনলাইনভিত্তিক সফটওয়্যার ডেভলপ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জানুয়ারি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফ, ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের কনভেনর মো. নুরুল হক, জাহাজ মালিক ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর ও বহির্নোঙর থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ১৮শ জাহাজ। এসব জাহাজের মাধ্যমে বছরে অন্তত ১০ কোটি টন পণ্য পরিবাহিত হয়। সম্প্রতি আমদানি কমে যাওয়ায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ লাইটার জাহাজ পণ্য খালাস ও পরিবহনের সিরিয়াল পেতে প্রচুর সময় লাগতো। তাই জাহাজ মালিকদের লোকসানের কারণে এ সেক্টরে নানা সমস্যা দেখা দেয়।
চাটগাঁ নিউজ/এমএসআই