নিজস্ব প্রতিবেদক : ফাঁকিবাজ পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ফাঁকিবাজ এসব কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাপেক্ষে চাকরি থেকে অব্যাহতিসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলেও জানান মেয়র।
রবিবার (১০ নভেম্বর) নগরের কালামিয়া বাজার এলাকায় বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধনে গেলে ৫১ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে ২০ জনের বিরুদ্ধে মেয়রকে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তখন মেয়র অভিযুক্ত এই ২০ জনের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত সরকারের আমলে প্রতি ওয়ার্ড থেকে ৪০-৫০ জন করে পরিচ্ছন্নতা কর্মী নেওয়া হয়েছিল। তারা ঠিকমতো কাজ করছে কি না সেটা আপনারা দেখবেন। ঠিক মতো কাজ না করলে আমাদের জানাবেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তির ব্যবস্থা করবো। তাদের চাকরি হয়তোবা নাও থাকতে পারে। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা যারা আছেন তারা নিজেদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব নিয়ে ঈমানদারিত্বের সঙ্গে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। কারণ আপনাদের দায়িত্বের সঙ্গে প্রতিটি ওয়ার্ডের মানুষের স্বাস্থ্য এবং নাগরিক দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা আছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ মশা নিয়ন্ত্রণে শাহাদাত হোসেন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ চার জোনে বেশি। এরমধ্যে যেখানে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা হচ্ছে বাকলিয়া জোন। এরপরের জোন যথাক্রমে বায়েজিদ, কোতোয়ালী এবং চকবাজার। এভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে সরেজমিনে পরিদর্শন করবো। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমি এখানে রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখেছি। মানুষ অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছে। জনদুর্ভোগ বাড়ছে। তাই রাস্তাঘাটগুলো দ্রুততার সঙ্গে মেরামতের চেষ্টা করা হবে। জলাবদ্ধতার মূল কারণ হচ্ছে নালা-নর্দমা অপরিষ্কার। তাই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে আমি নিজে এসেছি। এ শহরটা শুধুমাত্র আমার একার নয়, এ শহর আমাদের সবার। আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
চসিকের পরিচ্ছন্নতা অভিযান আজ থেকে রাতে শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ৪১টি ওয়ার্ডে চলতে থাকবে। যত্রতত্র ফেলবেন না। আপনারা যথাযথ স্থানে ময়লা ফেলবেন পরে সেগুলো নিয়ে গিয়ে চসিকের ডাম্পিং স্টেশনে ফেলা হবে। চসিকের পরিচ্ছন্নতা অভিযান আজ থেকে রাতে শুরু হবে। আমরা চাই শহর পরিষ্কার থাকুক। কোনো ধরনের অপরিস্কার এবং ময়লার দুর্গন্ধ যাতে মানুষের নাকে না আসে।
চসিক মেয়র বলেন, মশক নিধন অভিযান আরও জোরদার হবে। সেখানে ওষুধের গুণগতমান যদি ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে না পায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের আপস করতে চাই না। আমরা মশার একটা সমাধান পেয়েছি; সেটা হলো মস্কোবার। এটা অনেক ইফেকটিভ হবে। এই ওষুধটা প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে দিয়েছি এবং সেটা দিয়ে আমরা কাজ করছি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের দায়িত্ব পালনকালে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে ৪১ ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। নিয়োগপ্রাপ্ত এসব পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বিরুদ্ধে কাজে অনুপস্থিত থেকে কাউন্সিলর, সুপারভাইজারদেরকে ম্যানেজ করে হাজিরা প্রদান করা, কাজ না করা, গৃহস্থালি বর্জ্য পরিচ্ছন্ন বাবদ নগরবাসীর কাছ থেকে টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ