ফটিকছড়িতে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা, হুমকির মুখে পরিবেশ

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: ফটিকছড়িতে মাওলানা ফজলুল কাদের নামে এক মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে পাহাড়-টিলা কাটার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত বাগান বাজার ইউনিয়নের নতুন বাজার ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার। সরজমিনে গেলে দেখা যায়, বাগান বাজার ইউপির গজারিয়া ৬ নং ওয়ার্ড (গজারিয়া মসজিদের দক্ষিণে) রফিক মাষ্টার বাড়ী পাশে বিশাল এক পাহাড়ী-টিলা কাটা হয়।

এ বিষয়ে উক্ত অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ফজলুল কাদের মুঠোফোনে পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বাড়ী করার জন্য কেটেছেন এবং অনুমতি বিষয়ে তিনি বলেন, ঠিকাদার অনুমতির জন্য কাগজপত্র নিয়ে গেছে।

অন্যদিকে, ফটিকছড়িতে প্রতিদিন নির্বিচারে পাহাড় টিলা কেটে মাটি ভরাট ও বিক্রি করতেছে একটি চক্র। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় সন্ধ্যা হলেই পাহাড়ে শুরু হয় নির্যাতন। সংঘবদ্ধ পাহাড় খেকোরা প্রশাসনের নজর এড়াতে সন্ধ্যা থেকে রাতভর পাহাড়ের মাটি কাটে। স্কেভেটর দিয়ে এসব মাটি কেটে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, জমি ও পুকুর ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটভাটায় ইট তৈরিতেও পাহাড়ের এই মাটি ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এভাবে পাহাড় কাটায় জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার দাঁতমারা, বাগান বাজার ইউয়িনের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। উঁচুনিচু এসব পাহাড়ি এলাকায় যাতায়াতের রাস্তা সংকীর্ণ হলেও পাহাড় কেটে সেখানে ট্রাক, মিনি ট্রাক চলাচলের উপযোগী রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সন্ধ্যার পরেই স্কেভেটর দিয়ে পাহাড়ের মাটি কেটে ট্রাকে করে তা লোকালয়ে নিয়ে আসা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাহাড় কেটে পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া এই চক্রটি সংঘবদ্ধ। পাহাড় কাটা শুরু করলে প্রশাসনের আশেপাশে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে তাদের লোকজন পাহারায় থাকেন। তাই প্রশাসন অভিযানে বের হলেই তারা সটকে পড়েন। যার কারণে অভিযান করেও এসব পাহাড় খেকোদের সহজে শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় এই চক্রটি পাহাড় নিধন করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। আবার প্রশাসনের একটি পক্ষের সাথে এই পাহাড় খেকোর যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এবিষয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। স্থানীয়রা এব্যাপারে সজাগ না হলে তাহলে তা রোধ করা কঠিন হবে। যারা পাহাড় বা টিলা কাটার সাথে জড়িত খবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাটগাঁ নিউজ/আনোয়ার/এমকেএন

Scroll to Top