ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘমারা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে হঠাৎ দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে তিনটি কাটা ধানের বিশাল গাদা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তদের লাগানো আগুনে মুহূর্তেই লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দেখতে দেখতে ছাই হয়ে যায় কৃষক সেলিমের ছয় মাসের ঘামঝরা পরিশ্রম।
স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও রক্ষা করা যায়নি কৃষকের কেটে রাখা ধান। পুড়ে যায় প্রায় ৫ বিঘা জমির ৩০০ আড়ি ধান যা ছিল পুরো মৌসুমের তার একমাত্র সম্বল।
কৃষক সেলিম ভাঙা গলায় বলেন, আমি বর্গা নিয়ে জমিতে ধানের চাষ করি। ছয় মাস শ্রম দিয়েছি। ফসলও ভালো হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য—দুর্বৃত্তরা সব ছাই করে দিল। আমার সব শেষ। যারা এটা করেছে তাদের শাস্তি চাই।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঘটনাটিকে অমানবিক, অসভ্য সমাজের আচরণ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, শত্রুতা থাকতে পারে, কিন্তু খাদ্যশস্য পুড়িয়ে দেওয়া কোনো মানুষের কাজ নয়।
পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরাম চৌধুরী বলেন, মানুষ যে কতটা নিকৃষ্ট হতে পারে তারই প্রমাণ এটি। কারো ফসল পুড়িয়ে দেওয়া অমানবিকতার চরম উদাহরণ।
ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ছালেক বলেন, এটা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। কৃষকের বড় ক্ষতি হয়েছে। আমরা সব ধরনের সহায়তা দেব। তিনি আরও জানান, এ নিয়ে এলাকায় পরপর তিনটি ধান পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এগুলো পরিকল্পিত কিনা, তা তদন্ত জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফটিকছড়ি থানার ওসি নূর আহমদ। তিনি বলেন, এটি অমানবিক ও পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পরপর আগুনের তিনটি ঘটনার একটি শত্রুতাজনিত, একটি মাদকসক্তদের কাজ। সর্বশেষ ঘটনাটিও তদন্তাধীন। মনে হচ্ছে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকতে পারে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সেলিমকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
চাটগাঁ নিউজ/আনোয়ার/এমকেএন






