ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সৃষ্ট নাশকতার অভিযোগে দুই মামলায় ফটিকছড়ি বিএনপির জামায়াতের নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা প্রায় সবাই এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২১জুলাই ফটিকছড়ি ও ভূজপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় এজাহার নামীয় ৩৪জন সহ দুইশ জনের অধিক অজ্ঞাত নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়।
গত ১০দিনে এ দুই মামলায় ৩৮ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এসব মামলা ও আগের করা মামলা মাথায় নিয়ে গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন ঘরছাড়া। জামায়াতের নেতাকর্মীরাও গ্রেফতার আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। অনেকেই আত্মগোপনে থাকায় বন্ধ করে রেখেছেন মোবাইল ফোনও। ফলে কর্মীদের সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। কিছুদিন গা-ঢাকা দিয়ে গ্রেফতার এড়ানোই যেন এখন তাদের মূল লক্ষ্য। বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে রাতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। তাই পারতপক্ষে বাড়িঘরে যাচ্ছেন না তারা। আর ঝামেলা পোহাচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। বেশি বেকায়দায় আছেন নিম্ন আয়ের নেতাকর্মীরা।
পুলিশের ভয়ে বিএনপির কোনো স্তরের নেতাকর্মী কাজও করতে পারছেন না, ঘরেও থাকতে পারছেন না বলে তাদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ। ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপি নেতাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিলনা। এরপরও গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে।
সরকার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে বিএনপিকে ঘায়েল করতে চাইছে। এ কারণে অতীতের মতো নিরীহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে পুলিশ আবারও মাঠে নেমেছে।
বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, আগে থেকেই মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা। সিনিয়র নেতাদের প্রায় সবার বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে। আদালতে হাজিরা দিতে দিতেই দিন কাটে তাদের। এ অবস্থায় নতুন মামলা মহাবিপাকে ফেলে দিয়েছে তাদের। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির প্রথম সারির কিছু নেতা অদৃশ্য ইশারায় মামলা থেকে রেহাই পেলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির হাজারও নেতাকর্মী মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব কারণে অনেক দরিদ্র ও ত্যাগী নেতাদের পরিবারে নেমে এসেছে অভাব-অনটন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কারাগারে ও পালিয়ে থাকা একাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর পরিবার এসব অভিযোগ করেছেন। ফটিকছড়ি থানার ওসি মীর নুরুল হুদা বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হচ্ছে। একই ধরনের কথা বলেছেন ভূজপুর থানার ওসি কামরুজ্জামানও।
চাটগাঁ নিউজ/ফরিদ/এআইকে