চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এবার মুখ খুললেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন এবং মালিকানা সংক্রান্ত ৫টি সংযুক্তি প্রেরণ করেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই ছাড়া যেন সংবাদ পরিবেশন না করা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২ সংশোধিত ১৯৯৮ এর অনুকূলে মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর উদ্যোগে নিজের কিছু অর্থ ও দুটি কোম্পানি থেকে অর্থ সহায়তা নিয়ে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির নামে স্থায়ী আমানত হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা জমা করে ২০০১ সালে আবেদনের প্রেক্ষিতে ২১/০১/২০০২ চূড়ান্ত অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বর্ণীত মূল ফান্ড গঠনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কোনো আর্থিক অনুদান নেই। এই মর্মে কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারবে না। সিটি কর্পোরেশন আইনেও এটি করার এখতিয়ার তাদের নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন কিছু জমিতে স্থাপনা ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে বেশ মোটা অংকের আয় প্রাপ্ত হয়েছে। আর্থিকভাবে সিটি কর্পোরেশন জমির দাম ও স্থাপনার ভাড়া পেয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে একটি গোষ্ঠী বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এর ফলশ্রুতিতে মামলা হয় । মামলায় তারা পরাজিতও হয়।
ব্যারিস্টার নওফেল প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির পরিচালনা ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ গঠন বিষয়ক ৫টি সংযুক্ত কপি গণমাধ্যমের নিকট পাঠিয়েছেন।
সেগুলো হল –
১. ২০০১ সালে ৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত (কপি সংযুক্ত) সহ আবেদনের প্রেক্ষিতে কিছু শর্ত পূরণের জন্য একটি চিঠি প্রদান করে, উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠাতা কর্তৃক শর্ত পূরণের অঙ্গীকারনামা প্রধান করার পর ২১/৫/২০০২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করে (কপি সংযুক্ত)। এই অনুমোদনে পরিস্কার করে লিখে দেয়া হয় সিটি কর্পোরেশনের সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবেনা। ফলশ্রুতিতে সিটি কর্পোরেশন থেকে আর্থিক সংস্থান করা যায়নি।
২. অনুমোদন প্রাপ্তির পর প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা মরহুম আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একটি বোর্ড অব গভর্নরস এর মাধ্যমে (লিখিত ডিড ব্যতীত) চট্টগ্রামের কিছু শিক্ষাবিদ ও ব্যক্তির সমন্বয়ে, যথা- প্রফেসর ডঃ জামাল নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ডঃ অনুপম সেন, প্রফেসর আব্দুল মান্নান (সাবেক উপাচার্য), ডঃ আবু ইউসুফ আলম (সাবেক উপাচার্য), প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ (সাবেক উপাচার্য), ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল ইসলাম (সাবেক চেয়ারম্যান সিডিএ ও পোর্ট), জনাব মঞ্জুরুল আলম (সাবেক কাউন্সিলর), জনাব সুলতান মাহমুদ চৌধুরী (সাবেক ওয়াশা চেয়ারম্যান) ও জনাব আব্দুল ওহাব (সাবেক প্রধান নির্বাহী চসিক) ইত্যাদি নিয়ে পরিচালনা করতেন।
৩. পরবর্তীতে ২০১০ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন হওয়ার পর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠন বাধ্যতামূলক এবং সোসাইটি অ্যাক্ট এর অধীনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে। চসিক তখন ভুল করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন চেরিটেবল ফাউন্ডেশন নামে একটি বোর্ড গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে জমা করলে তা সঠিক হয়নি মর্মে উল্লেখ করে- উদ্যোক্তা তথা আর্থিক সহায়তাকারী প্রদানকারীর সমন্বয়ে ‘প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির চট্টগ্রাম ট্রাস্ট নামে’ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ট্রাস্ট অ্যাক্ট ১৮৮২ এর অধীনে গঠনপূর্বক সোসাইটি অ্যাক্ট ১৮৬০ এর অধীনে রেজিস্ট্রি করতে হবে এবং সেখানেও উদ্যোক্তা/ প্রতিষ্ঠাতা কে নিয়ে এই ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলে মত দেন (কপি সংযুক্ত)।
৪. প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা আলহ্বাজ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একটি বোর্ড অব ট্রাস্ট গঠন করে এবং এই ছাড়াও একটি রিট মামলায় মহামান্য হাইকোর্ট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ পর্যালোচনা করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার সুযোগ নেই মর্মে অভিমত প্রদান করেন (কপি সংযুক্ত)।
৫. পরবর্তীতে বোর্ড গঠন নিয়ে জটিলতার কারণে উপাচার্য মহোদয় এই বিষয়ে তৎকালীন সরকারের অভিমত জানতে আবেদন করলে, আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার ১৫-৬-২০১৮ সালে পুনর্গঠনের নির্দেশনা দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করে এবং তা সোসাইটিজ এক্ট এর অধীনে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট কোম্পানি এন্ড সোসাইটিজ এ নিবন্ধন করা হয় (সংযুক্ত)।
উল্লেখ্য, সেই সময় বিওটির বর্তমান চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি কিংবা উপমন্ত্রী কিছুই ছিলেন না। এমতাবস্থায়, ট্রাস্ট গঠন নিয়ে কোন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই না করে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ/এসএ