সারাদেশে অনিবন্ধিত নূরানি মাদরাসা বেড়েই চলেছে। সেখানে সন্তানদের ভর্তি করছেন অভিভাবকরা। ফলে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুশিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে। বিষয়টিকে ‘উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে তা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীকে অবগত করেছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)।
রোববার (৩ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের প্রথম দিনের তৃতীয় অধিবেশনে তারা এ বিষয়ে অবগত করেন।
পরে শিক্ষামন্ত্রী ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবেন বলে ডিসিদের আশ্বস্ত করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিতে তাৎক্ষণিক নির্দেশনাও দিয়েছেন তারা।
অধিবেশনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বিকেলে অধিবেশন শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী।
শিক্ষামন্ত্রী হিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আজকের সম্মেলনে সারাদেশে অনিবন্ধিত মাদরাসা চালুর বিষয়টি উঠে এসেছে। ডিসিরা জানিয়েছেন, যেখানে-সেখানে এখন নূরানি কিংবা বিভিন্ন নামে মাদরাসা খোলা হয়েছে। আমরা তাদের (ডিসিদের) আশ্বস্ত করেছি, বাংলাদেশ মাদরাসা বোর্ডের মাধ্যমে নিবন্ধনের যে প্রক্রিয়া রয়েছে, তার বাইরে মাদরাসা খোলার কোনো সুযোগ নেই। এ প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে যারা মাদরাসা খুলছেন, সেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সার্ভে হয়েছে, সেই তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সংখ্যার তথ্য পাওয়া গেছে। তারা বেফাক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের থেকে অনুমোদন নিয়ে চালু করেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখার বিষয়। কীভাবে বেফাক নিবন্ধন দিচ্ছে, সেটাও জানতে হবে।’
অনিবন্ধিত নূরানি মাদরাসার কারণে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি ও উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যত্রতত্র এসব (অনিবন্ধিত নূরানি) মাদরাসা চালুর কারণে ওইসব এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়; যেখানে নতুন কারিকুলাম পড়ানো হচ্ছে, সেখানে ভর্তি হলেও উপস্থিতির জায়গায় কমতি দেখা যাচ্ছে। তা কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়। এটা নিয়ে আমরা মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করবো। পাশাপাশি আমরা সেখানে (মাদরাসা) কীভাবে আমাদের নতুন কারিকুলাম অনুসরণ করানো যায়, তা নিয়ে কাজ করবো।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ প্রমুখ।