প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীরা লিখে দিল ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ফুঁসে ওঠেছেন চবি শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ ।

এরই জের ধরে আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে প্রশাসনিক ভবনে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে প্রতিবাদ জানান বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী যাদের অধিকাংশই বাম ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

তারা বলেন— আমরা জেনেছি, আজ প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। এদিকে গতকাল (শুক্রবার) দেখেছি, একজন রাজনৈতিক নেতা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিদার বলেছেন। এ জন্য আমরা প্রশাসনিক ভবনের নাম মুছে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে আজকে আমাদের কর্মসূচি ছিল প্রতিবাদী গ্রাফিতি অঙ্কন।

তিনি আরো বলেন, সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী স্যার আপত্তি জানিয়েছিলেন, তবুও আমরা প্রশাসনিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. কোরবান আলী বলেন, আমি তাদের (শিক্ষার্থীদের) জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিলাম যে কেন তারা এটি করছে? তারা জানালো, প্রশাসন তাদের কোনো কথা শোনেনি। তাই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তারা এটি লিখেছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে জোবরা গ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা হচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক, আমরা জমিদার। জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা কি আমরা মেনে নিতে পারি? কখনো না। আমরা অতীতেও মেনে নেইনি, সামনেও মেনে নেব না।’

তিনি বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়টা হচ্ছে আমাদের বুকের ওপর। আমরা হচ্ছি এই জায়গার মালিক। এ জন্য আমরা অন্যায় কিছু মেনে নেব না। আমাদেরকে সম্মান করতে হবে। সম্মান দেওয়ার মতো পরিবেশ আমরা করে দেবো, বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তাহলে আমরা জনগণকে নিয়ে যেটা করা দরকার সেটা ইনশাআল্লাহ আমরা সামনে করব।’

শুক্রবার রাতে তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট, এ এফ রহমান হল ও শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে সমবেত হয়ে শিক্ষার্থীরা এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।

এরপর সমালোচনার মুখে সিরাজুল ইসলাম তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে আমার বক্তব্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছি।

ক্ষমা চাইলেও সহসা নিস্তার পাচ্ছেন না তিনি। ইতোমধ্যে উক্ত বক্তব্যের জন্য তার কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নোটিশে তাকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top