চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : দেশের মুরগির বাচ্চা ও পোলট্রি খাদ্য (ফিড) উৎপাদন খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান প্রভিটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী-ছেলেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত।
ব্যাংক এশিয়ার ১৭৩ কোটি টাকা ঋণ খেলাপের অভিযোগে একটি মামলায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। ব্যাংকটি আদালতে অভিযোগ করেছে, ঋণ পরিশোধ না করে তারা বিদেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালতটির বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম জানিয়েছেন, আদালত প্রভিটা গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নুরুন্নবী ভূঁইয়া এবং তার স্ত্রী সুলেখা ইব্রাহিম ও ছেলে রিদোয়ানুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন। ২৮ জানুয়ারি তাদের পাসপোর্টসহ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
জানা গেছে, ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে নেওয়া ঋণ দুই দফায় পুনঃতপশীলের পর গত বছরের নভেম্বরের আগপর্যন্ত প্রভিটা গ্রুপের কাছে পাওনা দাঁড়ায় ১৫২ কোটি ৯০ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫৬ টাকা ৮৮ পয়সা। এর বিপরীতে প্রভিটা গ্রুপ পরিশোধ করে মাত্র এক কোটি ৫ লাখ ৯০০ টাকা ৬৯ পয়সা।
এরপর আর পরিশোধ না করায় গত বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তাদের কাছে ব্যাংকটির পাওনা দাঁড়ায় ১৭৩ কোটি ৪০ লাখ ১০ হাজার ৮২৮ টাকা ৭৩ পয়সা। এ অবস্থায় গত বছরের ১২ নভেম্বর খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংক এশিয়া কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করে। এতে নুরুন্নবী ও তার স্ত্রী-ছেলেসহ চারজন এবং গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- প্রভিটা চিকস লিমিটেড, প্রভিটা ব্রিডার্স, প্রভিটা ফিড, প্রভিটা হ্যাচারিজ ও প্রভিটা ফিশ ফিড।
২৬ নভেম্বর ব্যাংক এশিয়ার পক্ষ থেকে আদালতে এক আবেদনে বলা হয়, ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ না করে প্রভিটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী-সন্তান দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। তারা যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন এজন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি পাসপোর্ট জব্দের আবেদন জানায় ব্যাংক এশিয়া কর্তৃপক্ষ। বুধবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত বাদীর আইনজীবীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে আদেশে উল্লেখ করেন, ব্যবসার নামে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রভিটা গ্রুপ শর্তভঙ্গ করে ব্যবসা বর্হিভূত কাজে খরচ করেছেন। দুই দফায় পুনঃতফশীলের পরও ঋণ পরিশোধে কোনো সদিচ্ছা দেখায়নি।
প্রভিটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আরও প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং সেগুলো পরিশোধ না করে বিদেশে পাড়ি জমানোর পাঁয়তারা করছেন। তারা বিদেশে পাড়ি জমাতে পারলে বিপুল পরিমাণ ব্যাংকের টাকা আদায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আদালত ব্যাংক এশিয়ার আবেদন মঞ্জুর করে বিবাদীরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইমিগ্রেশন বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ