চটগাঁ নিউজ ডেস্ক : নিজেকে সহকারী পুলিশ কমিশনার পরিচয় দিয়ে এবং পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়িতে পুরো নগরী ঘুরে বেড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। সড়কে গাড়ি আটকে ভয়ভীতি দেখানো, লোকজনকে জিম্মি করে হুমকিধমকি ও সর্বশেষ ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের অভিযোগও পাওয়া গেছে এই তরুণের বিরুদ্ধে। অবশেষে আসল পুলিশের হাতে ধরা পড়ল এই নকল পুলিশ।
গ্রেফতার তরুণ ইশতিয়াক হোসাইন তানভীর (২২) প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের ছনদণ্ডী গ্রামে তার বাড়ি। থাকেন নগরীর খুলশী আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কে ১৬ নম্বর ভবনের বাসায়।
থানা থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরত্বের ওই বাসা থেকেই মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইশতিয়াককে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে হাজির হন খুলশী থানায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ইশতিয়াকের বাবা প্রকৌশলী আবু তাহের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। ইশতিয়াক প্রথমে ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। পরে সেখানে ভর্তি বাতিল করে চট্টগ্রামে এসে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হন। এখন তিনি পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা ফেসবুকে দেখতে পাই, একজন তরুণ পুলিশের পোশাক পরে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও আপলোড করেছেন। এসব কর্মকাণ্ড দেখে সন্দেহ হলে আমরা তার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করি। জানতে পারি, তার নাম ইশতিয়াক হোসেন তানভীর। তিনি পুলিশের পোশাক, র্যাংক-ব্যাজ, মাস্ক, ক্যাপ পরে ছবি ফেসবুকে দিলেও পুলিশের কোনো পর্যায়ের সদস্য নন।’
‘আমরা তাকে ফলো করে দেখতে পাই যে তিনি পুলিশের স্টিকার সাঁটানো একটি প্রাইভেট কার নিয়মিত ব্যবহার করেন। আমরা তার গতিবিধি অনুসরণ করে ওই প্রাইভেট কারসহ তাকে আটক করি। আমরা জানতে পেরেছি, তিনি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা সেজে প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন,’— বলেন বেলায়েত হোসেন।
ইশতিয়াক হোসেনের ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে দেখা গেছে, গত ১১ জানুয়ারি তিনি পুলিশের পোশাক পরা ছয়টি ছবি আপলোড করেন। সাদা রঙের একটি জিপের সামনে তিনি বিভিন্ন ভঙ্গিতে তোলা এসব ছবি পোস্ট করেন।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেছেন, তার সঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তার সম্পর্ক ছিল। ওই কর্মকর্তার দেহরক্ষীর পোশাক পরে তিনি ছবিগুলো তুলেছেন। আর র্যাংক-ব্যাজ লাগানো ক্যাপগুলো কীভাবে সংগ্রহ করেছেন, তা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি।’
চাটগাঁ নিউজ/এসএ