পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীকে ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৭

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : পুলিশ হেফাজতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে ইমাম হোসেন আকাশ নামে এক ছিনতাইকারীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৭।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে চমেক হাসপাতালের ষষ্ঠ তলায় ২৮ নম্বর নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে এ হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে নগরীর পাঁচলাইশ থানা পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেফতার সাতজন হলেন— ছিনিয়ে নেওয়া আসামি মো. ইমাম হোসেন আকাশ (২৫), তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২৪), ভাই মোহাম্মদ হোসেন (১৯) এবং হামলায় অংশ নেওয়া আছমা (২৮), মো. মুন্না (২২), সুমাইয়া আক্তার (২৪) ও রাব্বি (১৯)।

পুলিশ জানায়, হামলার সময় ওই আসামিকে পাহারায় থাকা দেলোয়ার হোসেন নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। তিনি চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

হামলা চালিয়ে পুলিশ হেফাজত থেকে নিয়ে যাওয়া ওই আসামির নাম মো. ইমাম হোসেন আকাশ (২৫)। তার বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া গ্রামে। তবে স্ত্রী, ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর এলাকায় এক চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করে জনগণের গণপিটুনির শিকার হন ছিনতাইকারী ইমাম হোসোন আকাশ। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারী আকাশের ‘নিজস্ব বাহিনী’ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘একজন এএসআই এবং দুজন কনস্টেবলের পাহারায় আকাশ চিকিৎসাধীন ছিল। রাত ৮টার দিকে তার ছোট ভাই ও স্ত্রীসহ প্রায় ১০ জন বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঢোকে। তারা কনস্টেবল দেলোয়ারকে ছুরিকাঘাত করে চিকিৎসাধীন আকাশকে নিয়ে দ্রুত নেমে যায়। তিন পুলিশ সদস্যই নিরস্ত্র ছিলেন। তারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও হামলাকারীরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।’

পুলিশকে আহত করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান শুরু করে। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।

নগর পুলিশের বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার শিকার চীনের নাগরিকের পরিচয় আমরা পেয়েছি। তার নাম লি সিয়াও ফোং। তিনি মূলত চীনের বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারদের মালামাল সরবরাহের ব্যবসা করেন। বাংলাদেশে আসার পর গত তিন মাস ধরে ঢাকার মতিঝিলে থাকেন। ব্যবসায়িক কাজে মঙ্গলবার সকালে একজন দোভাষীসহ চট্টগ্রামে আসেন। প্রথমে তারা মুরাদপুরে গিয়ে কিছু ব্যবসায়িক কাজকর্ম করেন।’

তিনি বলেন, ‘এরপর তারা বন্দর এলাকায় আসেন। তবে বন্দরে কেন এসেছেন, সেটা আমরা জানতে পারিনি। বন্দর এলাকায় আসার পর তিনি তার দোভাষীকে হারিয়ে ফেলেন। তাকে খোঁজার সময়ই মূলত তিনি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top