রাঙামাটি প্রতিনিধি: দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ নির্ভর পার্বত্য রাঙামাটিকে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি করানোর অন্যতম প্রধান আকর্ষন ঝুলন্ত সেতুটি বর্তমানে পানির নীচে ডুবে গেছে। সেতুর উপর এক ফুট পানি উঠে যাওয়ায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন রাঙামাটি কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের সেতুর উপর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃক ১৯৮৬ সালে রাঙামাটি শহরের শেষ প্রান্তে কাপ্তাই হ্রদের দুই পাহাড়ের সংযোগে ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণ করেছিলো। নয়নাভিরাম বহুরঙা এই ঝুলন্ত সেতুটি দুইটি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের মধ্যে গড়ে দিয়েছে হৃদ্দিক সম্পর্ক।
সিম্বল অব রাঙামাটি খ্যাত এই ঝুলন্ত সেতুর কারনেই রাঙামাটিতে প্রতিদিনই হাজারো পর্যটক আসা-যাওয়া করে। আর এতে করে স্থানীয়রা পর্যটকদের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
স্থানীয় নৌযান ব্যবসায়ি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা চালানো দোকানিরা জানিয়েছেন, ‘সেতু ডুবে যাওয়ায় আমাদের কোনো বোটগুলো ভাড়া হচ্ছেনা। এছাড়াও পর্যটক না আসায় আমাদের দোকানগুলোতে বিক্রয়ও হচ্ছেনা। পানি না কমলে আমাদের আয় হবেনা এবং এতে আমাদের সংসার চালানো অনেক কষ্টকর হবে। তাই আমরা চাই সরকার কাপ্তাই হ্রদে অন্তত ৪/৫ ফুট পানি যদি কমিয়ে দেয় তাহলে ব্রীজটি ভেসে উঠবে পর্যটকরা ব্রীজ দেখতে আসবে এবং আমাদেরও আয় হবে।
বিগত সপ্তাহব্যাপী সময়ধরে টানা বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়েই চলেছে। আর এতে করে রোববার সকাল থেকে ঝুলন্ত ব্রীজে পানি উঠে ব্রীজের পাটাতন এক ফুট পানির নীচে ডুবে যায়। এতে করে দূর্ঘটনা এড়াতে পানি না কমা পর্যন্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। এদিকে রাঙামাটির ঝুলন্ত ব্রীজ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১৫ হাজার টাকার ক্ষতি হচ্ছে রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের। সংস্থাটির তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের অধিক পর্যটক ওঠে ঝুলন্ত সেতুতে। এতে আয় বাড়ে পর্যটন করপোরেশনের।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানিয়েছেন, পানির কারনে আমরা আপাতত পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। পানি কমলে আবার ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। সেতু ভেসে না উঠলে পর্যটনে লোকসান হওয়ার পাশাপাশি পর্যটক কমবে। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।