সিপ্লাস ডেস্ক: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, “সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠ্যবইয়ে ভুল নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে। যা বইয়ে নেই, সেটা নিয়েও বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যার অধিকাংশ কথাই মিথ্যা।”
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে কৃতি শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “একটি কাজ সম্পন্ন করলে সেখানে কিছুটা ভুল থাকা স্বাভাবিক। আমরা যখনই ভুলগুলো সম্পর্কে অবগত হচ্ছি, তখনই সেটা সংশোধনে কাজ করছি। তবে যা বইয়ে নেই, সেটা নিয়েও বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কিংবা সম্প্রতিকতাকে উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”
তাই গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
এই সরকারের আমলে পঠনপাঠন পদ্ধতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শুধুমাত্র জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এই যুগে অচল। যুগের সাথে চলতে হলে দক্ষ হয়েও গড়ে উঠতে হবে। আমরা এমন একটি শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে কাজ করছি, যেখানে একজন শিক্ষার্থী হবে সৃজনশীল, যোগাযোগ ও প্রযুক্তিজ্ঞানে দক্ষ, সহমর্মী, মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, সহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তায় বিশ্বাসী। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা যা পড়ছে, সেটা তারা জেনে পড়ুক। সেই অনুযায়ী তারা কাজ করুক এবং হাতে-কলমে দক্ষ হয়ে উঠুক।”
“এই শিক্ষা কর্মসূচি নিয়ে আমরা কাজ করছি। কারণ সোনার মানুষ মানে অচল মানুষ নয়। সোনার মানুষ হবে মানবিক মানুষ।
উচ্চশিক্ষায় প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীই পরবর্তীতে শিক্ষকতা পেশায় আসেন। তাই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের মতো উচ্চপর্যায়েও খুব শিগগিরই ইউজিসির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি বিষয়ে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার ৫ বছর পর সেটা প্রাসঙ্গিক নাও থাকতে পারে। কেননা প্রতিনিয়ত বিশ্ব বদলাচ্ছে। কিন্তু সেই অবস্থায় তারা নিজের অবস্থানে থেকে যাতে নিজেকে দক্ষ ও সময়োপযোগী করতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। সেই লক্ষ্যে আমরা একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছি। সেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করছি। যার সামগ্রিক প্রচেষ্টায় দেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে। এমনকি প্রয়োজন অনুসারে ছোট ছোট কোর্স করে শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষতার বৃদ্ধি করতে পারে সেই জন্য কাজ করছি।”
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের প্রাজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার দূরদৃষ্টিতে ২০১০ সালের শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। সেই শিক্ষানীতি পুনঃপর্যালোচনা করে যুগোপযোগী করার কাজ শুরু হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজন স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে অন্যদের সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরাও পথিকৃতের ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. মুরশেদুল কবীর।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনিস্টিউটের ১০৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। এদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক পাচ্ছেন ৯৬ জন, দর্শন বিভাগের পাঁচজন ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ স্বর্ণপদক এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের দুইজন পাচ্ছেন ডা. এ কে খান স্বর্ণপদক।