নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজার থেকে পাইকারিতে বিভিন্ন পদের সবজি কিনলে গড় কেজি মূল্য পড়ছে ৪০ টাকা। আর সেই সবজি খুচরা বাজারে গেলেই কেজিপ্রতি মূল্য হয়ে যায় ৭০-৭৫ টাকা। অর্থ্যাৎ পাইকারি আর খুচরা বাজারে দামের ফারাক প্রায় দ্বিগুণ।
চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার সরেজমিন পর্যালোচনায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য মধ্যস্বত্বভোগী বা সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হলেও এর পেছনে খুচরা ব্যবসায়ীর কারসাজিই নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। এই কারসাজি বন্ধ করতে পারলে বাজার অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে মনে করেন তারা।
২২ অক্টোবর সকালে রেয়াজুদ্দিন বাজার পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাউ কেজিপ্রতি ১৭ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, শসা ৩৭ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৮ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (কাঁচা বা সবুজ) ৪৫ টাকা, ক্ষীরা ৩০ টাকা, করলা ৭২ টাকা, বেগুন ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু পাইকারি থেকে নগরীর বহদ্দারহাটস্থ সবজির খুচরা বাজারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এখানে লাউ প্রতি কেজি ৩০-৩৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৬৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (সবুজ) ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
পণ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেট ভাঙতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের দেখাদেখি ব্যক্তি উদ্যোগেও নায্যমূল্যে সবজি, ডিম, পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে।
সামাজিক প্রতিষ্ঠান আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘ক্রয়মূল্যে বিক্রি’ কর্মসূচির আওতায় বহদ্দারহাটে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে।
ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন জানান, আমি রেয়াজুদ্দিন বাজার থেকে ২ লাখ টাকায় ৫ টন বিভিন্ন জাতের সবজি কিনেছি। এক টনে একহাজার কেজি। ক্রয়মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি সবজির গড় পাইকারি মূল্য ৪০ টাকা। অথচ খুচরা বাজারে ৮০/১০০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই। আমার মত খুচরা বিক্রেতারা রেয়াজুদ্দিন বাজার, স্টিলমিল আড়ত বা অন্যান্য পাইকারদের কাছ থেকে সবজি কিনে বিক্রি করে থাকেন। যেখানে এক কেজি সবজির পাইকারি গড় মূল্য ৪০ টাকার বেশি নয়। সেখানে খুচরাতে এসে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। মানে পাইকারি আর খুচরা বাজারের মূল্য ফারাক প্রায় দ্বিগুণ। এই সিস্টেম ভাঙতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমরা পাইকারি ক্রয়মূল্যে সবজি বিক্রি করছি। আগামীতে ইপিজেড মোড়সহ কয়েকটি পয়েন্টে সবজি বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে নগরের চকবাজারে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উদ্যাগে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোগিতায় ডিম, পেঁয়াজ ও সবজি বিক্রি করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগামী ১৫ দিন এই বিক্রি কার্যক্রম চলবে। এখানে এক ডজন ডিম ১৩০ টাকা, আলু এক কেজি ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাটগাঁ নিউজ/ উজ্জ্বল/এসএ