পর্যটকশূন্য কক্সবাজারে ১০ দিনে ক্ষতি ২৫০ কোটি টাকা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৭ জুলাই থেকে কক্সবাজারের পর্যটনে অচলাবস্থা চলছে। হোটেল-মোটেলগুলোতে আগাম রুম বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকরা। আগামী পাঁচ দিনে কোনো আগাম বুকিং আর অবশিষ্ট নেই। ফলে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে সৈকতকেন্দ্রিক পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল। বেকার সময় কাটাচ্ছেন পর্যটনসেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা। এ অবস্থায় পর্যটনশিল্পে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি গুনছেন ব্যবসায়ীরা। গত ১০ দিনে এ শিল্পে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। একদিকে ক্ষতি, অন্যদিকে বাড়ছে দেনার দায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ ক্ষতির পরিমাণ দিনদিন কেবল বাড়বে বলেও দাবি ব্যবসায়ীদের।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর গত ১০ দিনে পর্যটনসংশ্লিষ্টদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা হতে পারে। আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি পর্যটকসেবায় রয়েছে রেস্তোরাঁ, নানা ধরনের পরিবহন, শামুক-ঝিনুক ও শুঁটকির দোকান, ইজিবাইক, ঘোড়া, ফটোগ্রাফার, কিটকট, ওয়াটার বাইক এবং ভাসমান হকারসহ নানারকম ব্যবসা। এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ মানুষ। চলমান পরিস্থিতির উন্নতি না হলে লোকসানের পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি এ শিল্পে জড়িতদের জীবনযাপনে দুর্ভোগের মাত্রা ছাড়াবে।

গতকাল দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবনী পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সৈকতের ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক-ওয়াটার বাইক চালক ও ঘোড়াওয়ালারা অলস সময় পার করছেন। পর্যটকহীন খালি পড়ে আছে কিটকটগুলো।

তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের হিসাব বিভাগ প্রধান মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, স্টাফ বেতন, জ্বালানি বিল, হোটেল অপারেশন, ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ, মেনটেন্যান্সসহ সব সাইড মিলিয়ে প্রতিদিন আমাদের প্রায় ১৫ লাখ টাকার অধিক লোকসান হচ্ছে। সে হিসাবে গেল ১০ দিনে আমাদের দেড় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

হোটেল কক্সবাজারের বিপণন কর্মকর্তা ইসতিয়াজ সোমেল বলেন, চলতি মাসের শেষ তারিখ পর্যন্ত ভালোই বুকিং ছিল। দেশব্যাপী অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগের ফলে রুমের বুকিংগুলো বাতিল করেছে পর্যটকরা। ফলে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে আমাদের।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, চলমান অস্থিরতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কক্সবাজার পর্যটনশিল্প। এটি পর্যটনশিল্পের জন্য চরম উদ্বেগের।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমাদের সমিতিভুক্ত ১২০টি রেস্তোরাঁয় ১০০টির মতো বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে লোকসান কমাতে শ্রমিক ছাঁটাই করা ছাড়া মালিকপক্ষের আর কোনো উপায় থাকবে না।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, হঠাৎ করে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলে কক্সবাজারে আটকা পড়েন পর্যটকরা। সেনাবাহিনীর পাহারায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজারে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে। আশা করছি শিগিগরই সবকিছু স্বাভাবিক হবে।  সূত্র : ইত্তেফাক অনলাইন

চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস

 

Scroll to Top