চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় পর্নতারকা যুগল মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও নাদিয়া আক্তার বৃষ্টির (২৮) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার মেট্টোপলিটন মাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।
আজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান তাদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘আসামিরা অশ্লীল ভিডিও নির্মাণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইন্টারনেটসহ অনলাইনে ছেড়ে উঠতি বয়সী তরুণদের অপথে নিয়ে যাচ্ছে। এতে কারও কোনো ইন্ধন আছে কি না, থাকলে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য এদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।’
শুনানি শেষে আদালত থেকে তাদের ৫ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন। তবে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এর আগে গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোররাতে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট বান্দরবানের হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এসময় পর্ন ভিডিও তৈরির আলামত হিসেবে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, সিমকার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
সম্প্রতি একটি পর্ন সাইটে শীর্ষ তারকাদের তালিকায় ওই যুগলের নাম উঠে আসে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ‘দ্য ডিসেন্ট’। অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, বাংলাদেশের আইনে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ না থাকলেও তাদের কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হয়নি।
সিআইডি বলছে, এই যুগল কেবল নিজেরাই পর্ন ভিডিও তৈরিতে সম্পৃক্ত নয়, অন্যদেরও এ জগতে সম্পৃক্ত করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক একটি প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে এক বছরে তাদের প্রকাশিত ১১২টি ভিডিও ২ কোটি ৬৭ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একাধিক আন্তর্জাতিক পর্ন ওয়েবসাইটে তারা ভিডিও আপলোড করতো। এভাবে খোলাখুলি প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেও তারা প্রচারণা চালাতেন। এসব প্রচারণায় ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হওয়ার জন্য অন্যদেরকে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন বার্তা প্রকাশ করতেন তারা।
পুলিশের এ বিশেষ শাখা আরও বলছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা এ যুগল দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও অনলাইনে রয়েছে তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের বহু ছবি। বিষয়টি ‘সামাজিক ও নৈতিকভাবে উদ্বেগজনক’ এবং একইসঙ্গে বেআইনি হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন সিআইডির সাইবার তদন্ত বিভাগের ইন্সপেক্টর শামীম হোসেন।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন