চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : মন্ত্রী হয়েই স্বতন্ত্র ও পরাজিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার মানহানি মামলা করেছেন নবনিযুক্ত গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। নির্বাচনী জনসভায় আপত্তিকর বক্তব্যের অভিযোগে পরাজিত প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিওর বিরুদ্ধে তিনি এ মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকালে মন্ত্রীর পক্ষে আবদুল জব্বার মামুন নামে এক আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুগ্ম জেলা জজ নজরুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফিরোজুর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই দেখতে পেয়ে বাদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার সুহিলপুর বাজারে নির্বাচনী জনসভায় ভোটারদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে বাদীকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করার জন্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে ফিরোজুর বলেন, ‘তার নিজের ঘরেই (মোকতাদির) আমার টাকা আছে। ৩০-৩৫ বছর আগে আমি তাকে (মোকতাদির) ৫০ হাজার টাকা দিয়া রাখছি। ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া করার সময় আর্থিক সহায়তা করেছি।’
জনসভায় উপস্থিত থাকা বিভিন্ন ব্যক্তি এই বক্তব্য মোবাইলে ধারণ করে ভাইরাল করে। তাছাড়া ফিরোজুর রহমান এই বক্তব্য তারেকুল ইসলাম অনিক নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে প্রচার করেছেন।
মন্ত্রীর আইনজীবী আবদুল জব্বার মামুন বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সুহিলপুরে এক নির্বাচনী সভায় ফিরোজুর রহমান এক নির্বাচনী সভায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য রাখেন। প্রকৃতপক্ষে ৩০/৩৫ বছর আগে ফিরোজুর রহমানের সঙ্গে মোকতাদিরের কোনো পরিচয় ছিল না। সে সময় বাদী মোকতাদির চৌধুরী তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিবের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ফিরোজুর রহমানের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই মানহানিকর বক্তব্য মন্ত্রীর ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে মান-মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদিরের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় ১০০ কোটি টাকা হবে।
আইনজীবী আরও বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য পরিহার করে বাদীর কাছে ক্ষমা চাইতে একটি আইনি নোটিশ ফিরোজুরের কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়। তিনি আইনি নোটিশ গ্রহণ করেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তাই আদালতে শতকোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়েছে। আগামী রোববার আদালত এই মামলায় শুনানি করবেন।
এ বিষয়ে ফিরোজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মামলা করার আগে তিনি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে ব্যস্ত থাকার কারণে সেদিকে মনোনিবেশ করতে পারিনি। যেহেতু তিনি মামলা করেছেন আইনিভাবে জবাব দেব।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ফিরোজুর রহমান ওলিও। নির্বাচনে কাঁচি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ৬৪ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে পরাজিত হন ওলিও। বিপরীতে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নবগঠিত মন্ত্রিসভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ