পদবঞ্চিত শিক্ষকরা বেতন পাবেন, ফিরে পাবেন চাকরিও

৫ আগস্টের পর জোর করে পদত্যাগ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: ৫ আগস্টের পর থেকে সারাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত দুই হাজার প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের কাউকে অপসারণ করা হয়েছে। কাউকে বরখাস্ত বা বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। কাউকে আবার অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে কর্মস্থলে। সব মিলিয়ে পদবঞ্চিত প্রায় দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষক গত ছয় মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না।

এমন অবস্থায় জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য হওয়া শিক্ষকদের বিষয়ে একটি মৌলিক সিদ্ধান্তে এসেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই শিক্ষকদের বেতন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে,সরকারি তদন্তে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ না মিললে তাদের চাকরিতেও ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক চিঠিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালককে এ শিক্ষকদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগের ক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়ে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় যথাযথ নির্দেশনা জারি করবে। যাদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের প্রমাণ মিলবে না, তারা চাকরিতে ফিরবেন। তদন্ত প্রতিবেদন আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বেতন-ভাতা চালু থাকবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, পদত্যাগের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত চলাকালে সবার বেতন চালু থাকবে। অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণিত না হলে চাকরিও ফিরে পাবেন শিক্ষকরা। যাদের অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়বে, মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেখা গেছে, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব,আক্রোশের জেরে একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতা শিক্ষার্থীদের হাতিয়ার বানিয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে পদত্যাগ করিয়েছেন। পদত্যাগ করানো কোন কোন শিক্ষকের স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে।

এই শিক্ষকদের নেতৃত্ব দেওয়া ‘পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠানপ্রধান শিক্ষক জোট’-এর আহ্বায়ক আনোয়ার ইসলাম তালুকদার জানিয়েছেন, সততা, নিষ্ঠা ও নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে স্বার্থলোভী লোকদের ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছি আমরা। তারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে,দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, যা অস্বাভাবিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।

তিনি আরও বলেন, কেউ চাকরি হারিয়ে, পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেউবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই হয়রানি থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই, নিরাপদে বাঁচতে চাই।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি 

Scroll to Top