চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির একাংশের সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। একইদিনে জুলাই অভ্যুত্থানের একাধিক মামলার আসামি আনিসুলকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ উল্লেখ করে তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন ‘জুলাইযোদ্ধা’ এক ছাত্রদল নেতা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সম্ভাব্য প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও নগরীর একাংশ) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে এ মনোনয়নপত্র নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও নগরীর একাংশ) আসন থেকে কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মহাজোটের সংসদ সদস্য হিসেবে একবার তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মূলধারা থেকে বের হয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ কয়েকজন নেতা সম্প্রতি আলাদা দল গড়েছেন। গত ৮ ডিসেম্বর আনিসুল ইসলাম মাহমুদের জাতীয় পার্টি এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি-জেপির নেতৃত্বে ২০টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) নামের একটি জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে।
মঙ্গলবার এনডিএফ’র পক্ষ থেকে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে ১২২ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরই আনিসুল ইসলাম মাহমুদের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়, যাতে তিনি রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘এনডিএফ’র নাম উল্লেখ করেছেন।
এদিন রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয় মিলিয়ে মোট ৩১টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ হয়েছে। সংগ্রহকারীদের মধ্যে বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী ফ্রন্ট, জাসদ, জাতীয় পার্টি, ইনসানিয়াত বিপ্লবসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আছেন।
এদিকে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুক জাতীয় পার্টির নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে গ্রেফতারের জন্য নগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আলাদা আবেদন করেছেন। এতে তিনি আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বিরুদ্ধে জেলার হাটহাজারী থানায় দু’টি এবং নগরীর কোতোয়ালি ও ডবলমুরিং থানায় দু’টিসহ মোট চারটি মামলার কথা উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে ওমর ফারুক সাংবাদিকদের জানান, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই তিনি নগরীর মুরাদপুরে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও পরবর্তীতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। একইদিন হামলায় তার সহযোদ্ধা চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের নেতা ওয়াসিম আকরাম নিহত হন।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ এবং আহতদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একাধিক মামলার আসামি হওয়ার পরও গণহত্যায় জড়িত আনিসুল ইসলাম মাহমুদের মতো চিহ্নিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রশাসন কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। এখন দোসরেরা নির্বাচনের মাঠেও নেমে যাচ্ছেন। এতে আমরা জুলাই আন্দোলনকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
ওমর ফারুক আরও বলেন, ‘আমার দাবি হচ্ছে, আগে গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার হতে হবে। তারপর তারা রাজনীতিতে থাকবেন বা নির্বাচন করতে পারবেন কী না সেটা তখনকার বিষয়। কিন্তু আগে বিচার হতে হবে।’
চাটগাঁ নিউজ/এসএ






