সিপ্লাস ডেস্ক: সামরিক বাহিনী নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। ‘বিবিসি হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। চলতি বছরের শেষ দিকে দেশটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে ফ্যাসিবাদী সরকার উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, তারা দেশকে ‘অন্ধকার যুগের’ দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ইমরান খান। কিন্তু গত বছর সংসদে এক অনাস্থা ভোটে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়।
পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, তার ক্ষমতাচ্যুতির একটি বড় কারণ হচ্ছে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর আক্রোশে পড়া। মূলত কয়েক দশক ধরেই দেশ পরিচালনা করছে সামরিক বাহিনী। ইমরান খান দাবি করেন যে, তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশটির একমাত্র দল যারা সামরিক স্বৈরশাসকদের হাতে তৈরি হয়নি। তবে অনেক সমালোচকই দাবি করেছেন যে, ইমরান খান ক্ষমতায় থাকাকালীন তাকে পেছন থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে সামরিক বাহিনী।
কিন্তু ইমরান খানের দাবি, তার দলের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক ভালো নয় বলেই দলটিকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। গত কয়েক মাসে তার দলের বেশ কয়েকজন নেতা দলত্যাগ করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে ইমরান খান জোর দিয়ে বলেন, তার দল এখনো সক্রিয় আছে। বিবিসির স্টিফেন স্যাকুরকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আমাদের দলকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারপরেও আমরা সরকার থেকে বেরিয়ে এসে ৩৭টি উপনির্বাচনের মধ্যে ৩০টিতে জয়ী হয়েছি।
ইমরান খান বলেন, সরকার আশা করেছিল যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার মাধ্যমে পিটিআইকে দুর্বল করা সম্ভব হবে। কিন্তু এতে তার দলের জনপ্রিয়তা কমার বদলে আরও বেড়ে গেছে।
ইমরান খান বলেন, তারা সব ধরনের চেষ্টাই করেছে। তারা ১০ হাজার মানুষকে জেলে ভরেছে। এর মধ্যে নারী এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীও রয়েছে। এসব লোকজনকে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী ভীত না থাকলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতো।
এদিকে ইমরান খানের সমর্থকরা মনে করেন, তিনি দুর্নীতিমুক্ত একজন নেতা। তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকেই প্রধান কারণ বলে মনে করে তারা। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুরু থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।