চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: কোয়াডকপ্টার ড্রোনে নারী ও শিশুদের আর্তনাদের আওয়াজ চালিয়ে শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে আনা হচ্ছে খোলা জায়গায়। তারপর নির্বিচারে তাদের উপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ইসরাায়েলি বাহিনী এই নির্মম পদ্ধতি অবলম্বন করছে ইসরায়েল। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কোয়াডকপ্টার ড্রোনে শিশু ও নারীর চিৎকারের আওয়াজ চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের ঘর থেকে খোলা ময়দানে বের করে এনে গুলি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউরোমেডের মানবাধিকার বিষয়ক পরিদর্শক মাহা হুসেইনি বলেন, নুসেইরাত অঞ্চলের বেশ কিছু পরিবারের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে আমি ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। এ ছাড়া চিকিৎসকের প্রতিবেদন থেকে এই ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। ফাঁদ বুঝতে না পেরে অনেক ফিলিস্তিনিই কোয়াডকপ্টারগুলোর কারণে মারা গেছেন।
নুসেইরাতের বাসিন্দা মোহাম্মদ নাভান বলেন, আমার মনে আছে, ড্রোন থেকে নারীর আর্তনাদ ভেসে আসছিল। আমার ভাইকে যেতে দেইনি। কিন্তু প্রতিবেশী আবু আনাস এই ফাঁদে পা দিয়ে মাথায় গুলি খেয়ে মারা গেছে।
গাজা ও খান ইউনিসে এ ধরনের অনেক ঘটনার সাক্ষ্য পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুর আর্তনাদ শুনতে পেয়ে বাইরে এসে গুলির শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজাভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই রিমোট চালিত ড্রোন ব্যবহার করছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। নজরদারি করা, বিশেষ কাউকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া এবং ভিড় ভাঙ্গার কাজে এই কোয়াডকপ্টার ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে বেশ কিছু ড্রোন গাজার আল-রাশিদ সড়কে মানুষের জমায়েতে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে বলে জানা যায়। এই ড্রোনগুলো থেকে হিব্রু ও আরবি গানের আওয়াজও শুনতে পাওয়া গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
চলমান যুদ্ধে ফিলিস্তিনের প্রায় ৪৫ হাজার বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। এ ছাড়া ক্রমাগত বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের কারণে ঘরছাড়া প্রায় পুরো অঞ্চলের বাসিন্দারা।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি