নাজিরহাটে একব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু, মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বি.এ. সুলতান মাস্টার বাড়ির পুকুরে ভেসে উঠল মো. এনাম (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে বাড়ির পাশের পুকুরে তাঁর মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। শুরু হয় নানা গুঞ্জন ও প্রশ্নের ঝড়।

নিহতের পুকুরপাড়ে পড়ে ছিল তাঁর ব্যবহৃত ব্যাগ, লুঙ্গি ও জুতা—যা পুরো ঘটনায় রহস্য আরও ঘনীভূত করে তোলে। এনামের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকাবাসীর মনে।

নিহতের ছেলে মোবারকের দাবি: আমি বাবাকে কখনো অবহেলা করিনি।
তাঁর ভাষ্যে, আমার বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তাঁর চিকিৎসায় প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করেছি, এমনকি হজ্ব করিয়েছি। কখনো অবহেলা করিনি।

তিনি জানান, ঘটনার আগের দিন রাতে বাবাকে ছোট বোনের বাড়ি থেকে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন এবং রাত ১টা ৪৫ মিনিটে ঘরে পৌঁছে দিয়ে তালাবদ্ধ করেন। এরপর রাত ২টা ১৫ মিনিটে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁকে ঝর্ণার পাশে দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি করেন।

মোবারক প্রশ্ন তোলেন, যদি আমি বাবাকে হত্যা করতাম, তাহলে পালিয়ে যেতাম না? অথচ এলাকাবাসী আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। আমাকে মারধর করেছে তারা।

নিহতের প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেন, এনাম নিয়মিতভাবে পরিবারের সদস্যদের হাতে নিগৃহীত হতেন। তাদের মতে, পরিবারের সদস্যরা তাকে গালাগাল ও মারধর করত। এ মৃত্যু স্বাভাবিক হতে পারে না। তাদের প্রশ্ন, যদি মোবারক বাবাকে ঘরে রেখে যান, তাহলে তাঁর লাশ পুকুরে কীভাবে এলো? তিনি তো চোখে ভালো করে দেখতেন না!

নিহতের শ্যালক এবং মোবারকের মামা আবুল কালাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। ভাগিনার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন হোক।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই ইয়াসিন জানান, যেভাবে এলাকাবাসী মোবারকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে, তা ভয়াবহ। সাংবাদিক ও পুলিশ উপস্থিত না থাকলে তার জীবনহানিও ঘটতে পারত।

ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর আহমেদ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় ছেলেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা প্রতিটি দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি।

চাটগাঁ নিউজ/আনোয়ার/এমকেএন

Scroll to Top