নিজস্ব প্রতিবেদক : মেয়র কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতিজনিত কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে করপোরেশনে নিযুক্ত প্রশাসককে। আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে কমিটিতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।তবে নগর সেবায় দায়িত্ব পাওয়া নতুন এই নগর সেবকরা সম্মানী পাবেন মাত্র পাঁচ হাজার টাকা।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনটি স্থানীয় সরকার বিভাগের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয় আজ রবিবার।
২০ সদস্যের মধ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মনোনীত একজন অতিরিক্ত কিংবা যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার কেউ, চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম বন্দরের একজন সদস্য, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অথবা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক, গণপূর্ত অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন করে মোট ৫ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাহী প্রকৌশলী, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের একজন করে প্রতিনিধি, প্রাথমিক শিক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেরও একজন সদস্য থাকছেন এই কমিটিতে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলামের স্বাক্ষরে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ‘স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন, সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এর ধারা ২৫(ক) (২) মোতাবেক সরকার কর্তৃক নিম্নরূপভাবে কমিটি করা হল।”
এই কমিটি স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কর্ম সম্পাদনে সহায়তা করবে। কমিটির সদস্যরা কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করবেন। এ কাজের জন্য কমিটির সদস্যরা বিধি অনুযায়ী সম্মানী ভাতা পাবেন। তবে তা পাঁচ হাজার টাকার বেশি হবে না। এর বাইরে অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তারা পাবেন না।
গত ৫ আগস্ট প্রবল গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। এর ১১ দিনের মাথায় ১৯ আগস্ট দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। সেদিনই সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এই সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে কেবল রংপুরে জাতীয় পার্টির মেয়র ছিলেন। বাকি ১১টিতেই দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এরপর গত বৃহস্পতিবার দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন ও ৩২৩ পৌরসভার সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের অপসারণ করে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
সিটির মেয়রদের মধ্যে প্রায় সবাই আত্মগোপনে অথবা মামলার আসামি হয়েছেন। তাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সমর্থক কাউন্সিলররাও কার্যালয়ে আসছিলেন না।
চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ