দেড়শ ভরি সোনা গায়েব : ব্যাংকের এমডিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ‘আত্মসাতের’ অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ চার জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এতে ব্যাংকের পরিচালক, শাখার কর্মকর্তাসহ অভিযুক্ত করা হয় আরও কয়েকজনকে।

সোমবার (৩ জুন) রাতে গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী নগরীর চকবাজার থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগকারী রোকেয়া আক্তার বারী চট্টগ্রাম নগরীর চট্টেশ্বরী রোডের বাসিন্দা। তিনি প্রয়াত চিকিৎসক এম এ বারীর স্ত্রী।

অভিযুক্তরা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ মনিরুল মওলা, কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবউল্লাহ, ব্যাংকের চকবাজার শাখার সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক এস এম শফিকুল মওলা এবং লকারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইউনুস।

অভিযোগে রোকেয়া আক্তার বারী উল্লেখ করেছেন, তিনি ও তার মেয়ে নাসিয়া মারজুক যৌথ মালিকানায় ২০০৬ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় একটি লকার ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করে আসছিলেন। লকারে নাসিয়া ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রায় ১৬০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গচ্ছিত ছিল।

তিনি গত ২৯ মে দুপুরে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন, তার জন্য বরাদ্দ করা লকারটি খোলা অবস্থায় আছে। সেখানে রাখা স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে প্রায় ১৪৯ ভরি ‘চুরি’ হয়েছে। স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে আছে ৬০ ভরি ওজনের ৪০ পিস হাতের চুড়ি, ২৫ ভরি ওজনের চার সেট জড়োয়া, ১০ ভরি ওজনের একটি গলার সেট, ২৮ ভরি ওজনের ৭টি গলার চেইন, ১৫ ভরি ওজনের ২৫টি আংটি এবং ১১ ভরি ওজনের ৩০ জোড়া কানের দুল।

চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, ‘ব্যাংকের গ্রাহক অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছেন। যেহেতু এটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শিডিউলভুক্ত। আমরা অভিযোগ গ্রহণ করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেটি দুদকে পাঠাব।’

এদিকে, চকবাজার শাখা প্রধান ও ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শফিকুল মওলা চৌধুরী জানান, গ্রাহকের অভিযোগ তদন্তে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।

উল্লেখ্য, লকারে স্বর্ণালঙ্কার না পেয়ে গত ২৯ মে রোকেয়া আক্তার বারী তাৎক্ষণিকভাবে চকবাজার থানায় গিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। চকবাজার থানার ওসি ব্যাংকে গিয়ে এর সত্যতা যাচাই করেন। তবে গ্রাহক লিখিত কোনো অভিযোগ না করায় বিষয়টি তখন প্রকাশ হয়নি। গত শনিবার (১ জুন) রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।

ঘটনা জানার পাঁচ দিন পর অভিযোগ দাখিলের বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীর ছেলে ডা. রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় কী ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সেটা নিয়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। আমরা প্রথমে ব্যাংককে স্বর্ণালঙ্কারগুলো খুঁজে বের করার জন্য সময় দিয়েছিলাম। একইসঙ্গে থানায় জিডি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু থানা থেকে আমাদের মামলা করতে বলা হয়। এরপর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করি। শেষ পর্যন্ত আমরা পারিবারিকভাবে থানায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিই।’

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top