দুদিন ধরে লাইটারে কর্মবিরতি, আটকা ১৫ লাখ টন পণ্য

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ মাদার ভ্যাসেল, সাগর, নদী ও ৫৭টি ঘাটে পণ্যবোঝাই লাইটার জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১৫ লাখ টন আমদানি করা পণ্য। এ ছাড়া বহির্নোঙ্গরে মাদার ভ্যাসেলগুলো অলসভাবে বসে থাকায় প্রতিটি জাহাজ ১০ থেকে ১৫ হাজার ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) চাঁদপুরে লাইটার জাহাজে ৭ নাবিক হত্যার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপদ নৌপথ নিশ্চিতের দাবিতে এ কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু হয়েছে। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো পণ্য খালাসে নিয়োজিত শ্রমিকরা চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটি ও কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন ঘাটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তারা বলেছেন, খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।

ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটে শত, শত লাইটারেজ জাহাজ অলস বসে আছে। এসব জাহাজ পণ্য খালাসের জন্য গত দুইদিন ধরে বহির্নোঙ্গরে যাচ্ছে না। একইভাবে পণ্য নিয়েও গন্তব্যে যাচ্ছে না নৌযানগুলো।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, বন্দরের বহির্নোঙ্গরে ২০টি মাদার ভ্যাসেল আমদানি করা পণ্য খালাসের জন্য দুইদিন ধরে অপেক্ষমাণ আছে। এসব জাহাজে মটর, মসুর ডাল, গম, সয়াবিন বীজ, সার, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ প্রায় সাড়ে চার লাখ মেট্রিকটন বিভিন্ন ধরণের খোলা পণ্য আছে।

বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেল (বিডব্লিউটিসিসি) সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫৭টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজ ১০ লাখ ১১ হাজার ২৩৫ টন আমদানি পণ্য বোঝাই করে বসে আছে কর্মবিরতির কারণে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন অ্যাংকরেজে ২০টি মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজে) খালাসের অপেক্ষায় আছে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ২০০ টন। ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর বিডব্লিউটিসিসি থেকে সিরিয়াল নেওয়া ৬২টি জাহাজ খালি অবস্থায় বসে আছে, কর্মবিরতি প্রত্যাহার হলে তারা মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য লোড করে গন্তব্যে যাবে। আরও ৩৫টি জাহাজ ১ লাখ ২৫ হাজার ১৫০ টন পণ্য বোঝাই করে গন্তব্যে যেতে পারছে না।

ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স অব চিটাগং (আইভোয়াক) এর মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ বলেন, যত দ্রুত লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার বা স্থগিত করা হবে তত দেশের জন্য মঙ্গল। বন্দরের বহির্নোঙরে যে বড় বড় জাহাজগুলো অপেক্ষমাণ আছে সেগুলোর প্রতিটির দিনপ্রতি ডেমারেজ প্রায় ১৫-২০ হাজার ডলার। এ ছাড়া আটশ’ লাইটার জাহাজে যেসব পণ্য আটকা পড়েছে তা-ও উদ্বেগজনক।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top